বাজারিছড়ায় একই রাতে দু’টি গ্রামে গরু চুরি! সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লেও অধরা চোরদল

মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ১২ নভেম্বর : কিছু দিন বিরতির পর বাজারিছড়া এলাকায় ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে গরু চোর চক্র। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে পৃথক দু’টি গ্রামে ঘটে গরু চুরির দু’টি ভয়াবহ ঘটনা। চুরির লাইভ দৃশ্য ধরা পড়ে সিসি টিভি ক্যামেরায়। গোটা চুরির মুহূর্ত ধরা পড়লেও এখনো পর্যন্ত অধরা চোরেরা। স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন, পুলিশ তৎপর না হওয়ায় গরু চুরি রীতিমতো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।এমন ঘটনাটি ঘটেছে বাজারিছড়া শান্তিনগর ও বাজারিগুল গ্রামে।

শান্তিনগর গ্রামের গৃহস্থ আবু দত্ত জানান, রাত প্রায় সাড়ে তিনটার দিকে এক যুবক ওয়াগনআর গাড়ি নিয়ে এসে তাঁর বাড়ির সামনে গাড়িটি রেখে সোজা গোয়াল ঘরে প্রবেশ করে। সিসি টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, চোর তালা ভেঙে একটি গাভি ও একটি বাছুর নিয়ে গাড়িতে তুলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। আবু দত্তের বাড়ি মাকুন্দা ক্রিশ্চিয়ান সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের ঠিক সামনে অবস্থিত।সকালে গৃহস্থ ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরের দরজা খোলা দেখে সন্দেহ হয়। ভিতরে গিয়ে দেখা যায় একটি গরু ও বাছুর উধাও। সিসি টিভি ফুটেজ ঘেঁটে চুরির ঘটনাটি নিশ্চিত হন পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় আবু দত্ত বাজারিছড়া থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হলেও এখনো পর্যন্ত অভিযুক্ত চোর বা চোরদল ধরা পড়েনি।একই রাতে বাজারিগুল গ্রামের শেকু পাল নামের এক কৃষকের গোয়াল ঘর থেকেও চুরি যায় তাঁর একটি পূর্ণবয়স্ক গর্ভবতী গাভি। তিনিও থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন। তাঁদের ধারণা, চোরেরা আশপাশেরই কোনো এলাকায় সক্রিয় একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য।

স্থানীয়দের অভিযোগ,প্রায় প্রতি রাতেই এই এলাকায় গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন যেন টুটো জগন্নাথ হয়ে বসে আছে। এত গরু চুরি হলেও আজ পর্যন্ত কোনো গরু উদ্ধার হয়নি, কোনো চোর ধরা পড়েনি,বললেন এক ক্ষুব্ধ কৃষক।ক্রমবর্ধমান এই চুরির ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার সাধারণ গৃহস্থ ও কৃষক সমাজ। তাঁরা জানান, প্রশাসন যদি কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে শিগগিরই পুরো অঞ্চলটি গরু চোরদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে।ভুক্তভোগী পরিবারগুলি ইতিমধ্যেই শ্রীভূমি জেলার পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং দ্রুত চোর চক্রকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।এদিকে, বাজারিছড়া থানার এক সূত্র জানিয়েছে যে,সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, এবং চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।তবে যতক্ষণ না চোর ধরা পড়ছে, স্থানীয়দের মধ্যে সেই ভয় ও ক্ষোভ যেন ক্রমেই বাড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *