‘শ্রীমন্ত শঙ্করদেব আবির্ভাব ক্ষেত্র’ উদ্বোধন
বরাক তরঙ্গ, ২৯ ডিসেম্বর : আজ বটদ্ৰবায় শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের আবির্ভাব ক্ষেত্রের উদ্বোধন করে এক জনসভায় ভাষণ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভাষণের শুরুতেই তিনি জগতগুরু শ্রীমন্ত শংকরদেবের চরণে প্রণাম জানান। অমিত শাহ বলেন, অতীতে দখলের কবলে থাকা শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের জন্মস্থানে আজ এই সুবিশাল প্রকল্প নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে, যা আমাদের সকলের জন্যই আনন্দের বার্তা। বটদ্ৰবা প্রকল্পের দ্বার উন্মোচন করতে পারা তাঁর জন্য পরম সৌভাগ্যের বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নিজের ভাষণে অমিত শাহ বলেন, সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে ধর্মের প্রচার করেছিলেন দুই গুরু। আজকের দিনটি তাঁর কাছে অত্যন্ত সৌভাগ্যের দিন। তিনি বলেন, গোপীনাথ বরদলৈ না থাকলে অসম ভারতের অঙ্গ হয়ে থাকত না। গোপীনাথ বরদলৈর কারণেই অসম ভারতের অঙ্গ হিসেবে রয়ে গেছে। বরদোৱাই থেকে নব বৈষ্ণব ধর্মের নবজাগরণ শুরু হয়েছিল। বটদ্ৰৱা ৫০০ বছরের ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে চিরকাল প্রতিষ্ঠিত থাকবে। এই প্রকল্পের ভূমি পূজন তিনিই করেছিলেন এবং আজ প্রকল্পের উদ্বোধন করার সৌভাগ্যও তাঁরই হয়েছে বলে জানান অমিত শাহ।

অমিত শাহ আরও বলেন, বরদোয়া অসমিয় সত্তার জীবন্ত প্রতীক। অসমিয়া সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এই প্রকল্প সহায়ক হবে। তিনি অভিযোগ করেন, শঙ্করদেবের জন্মস্থানে একসময় বাংলাদেশিদের দাপট ছিল, তবে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে বরদোৱাকে বাংলাদেশীমুক্ত করা হয়েছে। কাজিরঙাতও রাজ্য সরকার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। IMDT আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশিদের রক্ষা করা হতো বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এখন বেছে বেছে বাংলাদেশিদের শনাক্ত করা হবে এবং অসমের ভূমিকে বাংলাদেশিমুক্ত করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার এই অভিলাষী উদ্যোগ আজ বাস্তব রূপ পেল বলে উল্লেখ করা হয়। ২৯ ডিসেম্বর দিনটি অসমবাসীর জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে বিবেচিত হবে। ২২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বটদ্ৰৱা প্রকল্পের আওতায় ‘শ্রীমন্ত শঙ্করদেব আবির্ভাব ক্ষেত্র’ উদ্বোধন করে জনসভায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

এই প্রকল্পে রয়েছে গুরু আসন, মণিকাঞ্চন নামঘর, দু’টি জলপান গৃহ, প্রশাসনিক ভবন, যাত্রী নিবাস, একটি দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র, প্রধান প্রবেশদ্বার, সীমানা প্রাচীর, কলাকেন্দ্র, মিউজিক্যাল ফাউন্টেন ও লেজার শো, কৃষ্ণলীলা, নাটঘর, ১০টি জনগোষ্ঠীয় কুটির এবং একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র। পাশাপাশি বটদ্ৰবা সাংস্কৃতিক প্রকল্প তথা ‘শ্রীমন্ত শঙ্করদেব আবির্ভাব ক্ষেত্র’-এ বিষ্ণুর দশাবতারও স্থাপন করা হয়েছে।


