শিলচর শঙ্করমঠে হিন্দু সম্মেলন, সনাতন ধর্মের ঐক্য ও আত্মরক্ষার আহ্বান

দীপ দেব, শিলচর।
বরাক, ২৮ ডিসেম্বর : শিলচর সোনাই রোডের মহাপ্রভু সরণীস্থিত শঙ্করমঠ ও মিশন মণ্ডপে এক হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সম্মেলনে সনাতনী ধর্মীয় আস্থা, ঐক্য, ভ্রাতৃত্ববোধ জাগরূকরণের পাশাপাশি সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার ও ভেদাভেদ দূরীকরণ, আত্মরক্ষার চেতনা জাগরণ এবং আগামী প্রজন্মকে সনাতন জীবনের সঠিক পথ প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে বক্তারা আহ্বান জানান। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) দক্ষিণ আসাম পূর্ব প্রান্তের প্রচার প্রমুখ গৌরাঙ্গ রায় সহ বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী, প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপকুমার পাল, শঙ্করমঠ ও মিশনের কর্মাধ্যক্ষ বিজ্ঞানানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ প্রমুখের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। প্রায় ৫০০ জনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি সফল হয়েছে।

কুমারী পূজা ও পঞ্চপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। ভারতমাতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে আলোচনা সূচনা করা হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সম্মানিত অতিথিদের গলায় উত্তরীয় ও হাতে ফুলের চারা দিয়ে সম্মান জানানো হয়। স্বাগত বক্তব্যে হিন্দু সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস সনাতন ধর্মের ঐক্যবদ্ধতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

সভাপতি বিপ্লব কুমার দে বলেন, “হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হলেই দেশের উন্নতি ঘটবে। সকলে দেশের প্রতি নিষ্ঠাবান হয়ে কাজ করুন।” শঙ্করমঠ ও মিশনের কর্মাধ্যক্ষ শ্রীমৎ বিজ্ঞানানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ বক্তব্যে বলেন, “আজ হিন্দুরা নিজেদের ঐতিহ্য ভুলে ইউরোপীয় সংস্কৃতি গ্রহণ করছে। আমাদের প্রাচীন ঋষি-মুনিদের দেখানো ভারতীয় সভ্যতা ও শিক্ষা ভুলে গিয়ে বিদেশী নিয়ন্ত্রণে চলছি। এদেশ হিন্দুস্তান—আফগানিস্তান, পাকিস্তান বা বাংলাদেশ নয়। ধূতি-শাড়ি পরিধানে লজ্জা কেন? মহারানা প্রতাপ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস, শংকরাচার্য, শিবাজী, স্বামী বিবেকানন্দের মতো মহান বীরদের জন্মদেশে ভয় কীসের?” এ ছাড়া প্রদীপকুমার দেব, শঙ্কর পাল, সেবা বণিকেরা বক্তব্য রাখেন। শঙ্করমঠের গীতা ছাত্ছাত্রীরা গীতা পাঠ ও সনাতনী সঙ্গীত পরিবেশন করে সকলকে মুগ্ধ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অমর পাল, সুস্মিতা পুরকায়স্থ, সুধীর রঞ্জন দাস, মিঠুন দত্ত, ধীরেন্দ্র চন্দ্র দাস, দুলাল দাস, প্রথমা দত্তরায় প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মনোজকান্তি দাস ও পিন্টু পাল। বিজ্ঞানানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজের হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শপথ বাক্য পাঠের মধ্য দিয়ে সভা সমাপ্ত হয়। শেষে উপস্থিত সকলকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *