জেনারেল কামরায় এক যুবককে পিটিয়ে খুন, ধৃত চার চোর

৪ জানুয়ারি : দূরপাল্লার ট্রেনের ভরা জেনারেল কামরায় এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল চার চোরের বিরুদ্ধে! বৃহস্পতিবার ভোররাত ৩টে ৩০ মিনিট নাগাদ ভয়াবহ এই হামলার ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ দিল্লির হজরত নিজামউদ্দিন স্টেশনগামী দক্ষিণ এক্সপ্রেসে। বিষয়টি জানাজানি হয় বৃহস্পতিবার সকালে – যখন ওই ট্রেন নাগপুরে এসে পৌঁছয়।

রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত যুবকের নাম সুশাঙ্ক রামসিং রাজ। ২৫ বছরের সুশাঙ্ক আদতে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির বাসিন্দা। তিনি একটি ফার্মে শ্রমিকের কাজ করতেন। এই ঘটনায় সুশাঙ্কের বন্ধু কপিল কুমারকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। তিনিও গুরুতর জখম হন এই হামলায়।

এই ঘটনায় দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সবথেকে ভয়ঙ্কর বিষয় হল, ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর তা প্রকাশ্যে আসতেই প্রায় চারঘণ্টা সময় লেগে গিয়েছে!

জেনারেল কামরায় এক যুবককে পিটিয়ে খুন, ধৃত চার চোর

যদিও ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে রেল পুলিশ। চলন্ত ট্রেন থেকেই তাদের পাকড়াও করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে একজন নাবালক! বাকি তিনজন হল – ১৮ বছরের সইদ সমীর, ১৯ বছরের মহম্মদ ফইয়াজ হাসিমুদ্দিন এবং এম শাম কোটেশ্বর রাও।

সূত্রের দাবি, এই ঘটনার জেরে দিল্লিগামী ওই ট্রেনটির গন্তব্যে পৌঁছতে প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরি হয়। কারণ, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিট নাগাদ নাগপুর স্টেশনে ওই ট্রেনটি পৌঁছানোর পরই তদন্তের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়।

নিহত দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো, ঘটনাস্থল থেকে ফরেন্সিক নমুনা সংগ্রহ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

রেলের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, নিহত তরুণের পরিবারকে এককালীন ক্ষতিপূরণ হিসাবে আপাতত ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। রেল পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আক্রান্ত দুই যুবক সেকেন্দ্রাবাদ থেকে ওই ট্রেনে উঠেছিলেন। তাঁদের গন্তব্য ছিল ঝাঁসি।

ট্রেনের জেনারেল কামরা ভিড়ে ঠাসা থাকায় দুই বন্ধু শৌচালয়ের সামনেই ঘুমিয়ে পড়েন। অভিযোগ, সেই সময়েই কপিলের পকেটে থাকা ১,৭০০ টাকা নগদ এবং একটি মোবাইল চুরি করার চেষ্টা করে ওই চার চোর।

কপিল চিৎকার করে ওঠায় কামরায় থাকায় বাকি লোকজনের ঘুম ভেঙে যায়। এতে রেগে যায় দুষ্কৃতীরা। তারা কপিলকে বেধড়ক মারতে শুরু করে। এই সময় তাঁর বন্ধু সুশাঙ্ক বাধা দেন। ফলে তাঁকেও মারতে শুরু করে চোরেরা।

প্রায় আধঘণ্টা ধরে এই মারপিট চলে। শেষমেশ সহযাত্রীদের হস্তক্ষেপ হামলা থামে। কিন্তু, ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। এই মারপিটে সুশাঙ্কের শরীরের ভিতরের কোনও অংশে গুরুতর আঘাত লেগেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। যার ফলে সকাল ৬টা ৩০ মিনিট নাগাদ তিনি শৌচালয়ে রক্তবমি করেন এবং অজ্ঞান হয়ে যান।

রেল পুলিশ ওই কামরায় পৌঁছয় সকাল ৭টা ১৫ মিনিট নাগাদ। তারা চার অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, তারা সকলেই হায়দরাবাদের বাসিন্দা। তারাও সেকেন্দ্রাবাদ থেকে ট্রেনে উঠেছিল। এবং এই ঘটনার পর নাগপুরে ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।

Author

Spread the News