শেষমেশ বিজেপি ছাড়লেন বর্ষীয়ান নেতা প্রাক্তন মন্ত্রী রাজেন গোহাঁই
বরাক তরঙ্গ, ৯ অক্টোবর : দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক অসন্তোষ ও অভ্যন্তরীণ বিরোধের পর বৃহস্পতিবার অবশেষে বিজেপি থেকে পদত্যাগ করলেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতা রাজেন গোহাঁই। গুয়াহাটি বাজপেয়ী ভবনে উপস্থিত হয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেন।
রাজেন গোহাঁই বিজেপির একজন অন্যতম বর্ষীয়ান নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ছিলেন এবং নগাঁও লোকসভা কেন্দ্র থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি রেল প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

তবে তাঁর এই পদত্যাগ একেবারে আকস্মিক নয়। কয়েক বছর ধরে তিনি দলীয় অসন্তোষের ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন এবং একাধিকবার প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। গোহাঁই অভিযোগ করেন, বিজেপিতে দীর্ঘদিনের পুরনো নেতা-কর্মীদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে এবং তাঁকেও ইচ্ছাকৃতভাবে দলের মূলধারার বাইরে রাখা হয়েছে।
একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে গোহাঁই বলেন, “লক্ষণীয়ভাবে দেখা যাচ্ছে, ধীরে ধীরে বিজেপিতে অনিয়ম ও অবিচার বাড়ছে। আমাদের মতো পুরনো নেতা-কর্মীদের পরিকল্পিতভাবে বাইরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই আমাকে সাংসদ পদে টিকিট থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। শুধু আমার ক্ষেত্রেই নয়, অনেক পুরনো নেতাকর্মীর সঙ্গেই এমনটা হয়েছে।”
এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে, বিজেপির পুরনো ও নতুন নেতৃত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব অনেকদিন ধরেই চলে আসছে। এই একই কারণে পূর্বতন বিধায়ক অশোক শর্মাও বিজেপি ছেড়েছেন। গোহাঁই ও শর্মা ছাড়াও, আরও অনেক পুরনো বিজেপি কর্মী দলের নতুন নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
রাজেন গোহাঁই এর আগে ভারতীয় খাদ্য ও অসামরিক যোগান নিগমের চেয়ারম্যান পদ থেকেও পদত্যাগ করেছিলেন। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করেননি, আজকের পদত্যাগে পরিষ্কার হলো তাঁর অবস্থান।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে বড়সড় পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের ভিত আরও মজবুত করার চেষ্টা চালালেও, বিজেপির সামনে একের পর এক চ্যালেঞ্জ উঠে আসছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কীভাবে সামাল দেয়, তা সময়ই বলবে।