ধলাইয়ে ৩০ বছরে ধরে নির্দল বা তৃতীয় কোন দলের প্রার্থীই ফ্যাক্টর
বরাক তরঙ্গ, ২৮ অক্টোবর, সোমবার,
ধলাই বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে গত ৩০ বছরে দেখা যায় নির্দল প্রার্থী বা তৃতীয় কোন দলের প্রার্থী ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ান। এমনকি সেসব প্রার্থীরা শাসক দলের প্রার্থীকে হারানোর ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য। ১৯৯১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ধলাই থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্য। সে সময় কংগ্রেস প্রার্থীর ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অসম গণপরিষদের প্রার্থী কামাখ্যা প্রসাদ মালা। পরিমল শুক্লবৈদ্য পেয়েছিলেন ৩২ হাজার ৬৭৮ টি ভোট। অসম গণপরিষদের প্রার্থী কামাখ্যা প্রসাদ মালা ১৬ হাজার ৩৬৫ এবং কংগ্রেস প্রার্থী দিগেন্দ্র চন্দ্র পুরকায়স্থ পেয়েছিলেন ৮ ৫৩২টি ভোট। একইভাবে ১৯৯৬ সালে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এজিপির কামাখ্যা প্রসাদ মালা। তিনি পেয়েছিলেন ২৩ হাজার ৯৪৭টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্য পান ২৩১৭৫টি। সে সময় কংগ্রেস প্রার্থী গিরীন্দ্র মল্লিক ২৭ হাজার ৩২ টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। ২০০১ সালে নির্দল প্রার্থী কামাখ্যা প্রসাদ মালা ২২ হাজার ৯৩০ টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। পরিমলবাবু বিজেপির প্রার্থী হয়ে ২৬ হাজার ২৮৪ টি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। কংগ্রেস প্রার্থী গিরীন্দ্র মল্লিক ঝুলিতে পড়েছিল ১৬২৪১টি ভোট। ২০০৬ সালে ফের কামাখ্যা প্রসাদ মালা ২২ হাজার ৯২৯টি ভোট পেয়ে কংগ্রেস প্রার্থীর আগে ছিলেন। কংগ্রেস প্রার্থী হীরক দাস ২০৯০৭টি ভোট। এবং বিজেপির প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্য ৩৫১১৯টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
২০১১ সালে সরাসরি কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে লড়াই হয়। কংগ্রেস প্রার্থী গিরীন্দ্র মল্লিক পেয়েছিলেন ৫২ হাজার ৭৩৪টি ভোট এবং পরিমল শুক্লবৈদ্যের পক্ষে পড়েছিল ৩৮ হাজার ৩৬৪টি ভোট। ২০১৬ সালে একইভাবে এআইইউডিএফ প্রার্থী লালতা প্রসাদ মালা ১৩৩৮২ ভোট নিজের পক্ষে টেনেছিলেন। সেসময় বিজেপি প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্য ৬৮ হাজার ৬৯৪টি এবং গিরীন্দ্র মল্লিক ৪১ হাজার ৮৫৭টি ভোট। এবং সর্বশেষ ২০২১ সালে নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্য ৮২ হাজার ৫৬৮টি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছিলেন তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী কামাখ্য প্রসাদ মালা। তিনি পেয়েছিলেন ৬২১৭৬টি ভোট। ১৯৮৫ সালে নির্দল প্রার্থী কামাখ্যা প্রসাদ মালার চেয়ে মাত্র ৪০৭ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী দিগেন্দ্রচন্দ্র পুরকায়স্থ।
সেই হিসেব মতে দেখা যায় ধলাই নির্বাচনে নির্দল বা তৃতীয় শক্তি ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। এতে বিচার করলে বর্তমানে ধলাই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে মোট নয়জন প্রার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছেন শাসক ও বিরোধীদলের দুই শক্তিশালী প্রার্থী। এবারের নির্বাচনেও একইভাবে হিসেব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তৃতীয় শক্তিশালী প্রার্থী হয়ে মাঠে রয়েছেন সদ্য দল ত্যাগ করা প্রার্থী অমিয়কান্তি দাশ। যদি গত ৩০ বছরের ধারা অব্যাহত তাকে তাহলে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারেন অমিয়কান্তি। অমিয়কান্তি দাশকে মোটেই হালকাভাবে নেওয়া যাবে না তিনি এই অঞ্চলের একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এ ছাড়া প্রভাবশালী ব্যক্তি। রয়েছে জনপ্রিয়তাও। ফলে উপনির্বাচনেও তৃতীয় শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। যদি অমিয়কান্তি দাশ নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন তবে চিত্র পাল্টে যাবে। এবং সরাসরি লড়াই হবে শাসক-বিরোধীর।