বন্যা প্রতিরোধকে শুধুমাত্র আপতকালীন কর্তব্য নয়, গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে দেখতে হবে : কৌশিক
জেলা আয়ুক্ত কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক
জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৮ মে : বর্ষা মরসুম আসার আগেই বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে এক উচ্চপর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক করলেন মন্ত্রী কৌশিক রায়। বুধবার শিলচরের জেলা আয়ুক্তের কার্যালয়ের নবনির্মিত সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তিনি। বৈঠকে মূলত কাছাড় জেলার বর্ষা মরসুমের পূর্ব প্রস্তুতির ওপর জোর দেন। এদিন তিনি বৈঠকে বন্যা প্রশমন, আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকগুলিকে অগ্রাধিকার দেয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কাছাড়ের জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব, চার বিধায়ক মিহিরকান্তি সোম, দীপায়ন চক্রবর্তী, নীহাররঞ্জন দাস এবং মিসবাহুল ইসলাম লস্কর সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। আলোচনার কেন্দ্রে ছিল শিলচর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে জলনিষ্কাশন সমস্যা ও প্রতি বছর বর্ষার মরসুমে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কার্যকর মোকাবিলা।

মন্ত্রী কৌশিক রায় তাঁর বক্তব্যে সাফ জানিয়ে দেন, বন্যা প্রতিরোধকে শুধুমাত্র এক আপতকালীন কর্তব্য হিসেবে নয়, বরং জীবন ও পরিকাঠামো রক্ষার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে দেখতে হবে। তিনি স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেন যে, প্রতিটি বিভাগকে ড্রেনেজ ব্যবস্থার সুষ্ঠু কার্যকারিতা, স্লুইস গেটগুলির সচলতা, নদীবাঁধগুলির দৃঢ়তা এবং দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের পর্যাপ্ত মজুদ, সরবরাহ বজায় রাখা তথা বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখার উপর জোর দিতে হবে।
মন্ত্রী কৌশিক রায় সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলের স্লুইস গেটগুলির অবস্থা অবিলম্বে পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দেন, পাশাপাশি সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর (BSF) সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে কাজ করার নির্দেশ প্রদান করেন। জলসম্পদ বিভাগের কার্যনির্বাহী বাস্তুকারকে এই স্লুইস গেটগুলির অবস্থা ও সংশ্লিষ্ট জনবলের বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (DDMA)-এর নিকট দাখিল করারও নির্দেশ দেন এবং একই সঙ্গে আগামী ৩১ মে’র মধ্যে নদীবাঁধগুলির নজরদারির জন্য একটি ‘এম্ব্যাংকমেন্ট মনিটরিং কমিটি’ গঠনেরও আদেশ দেন।

মন্ত্রী শিক্ষা পরিকাঠামোর ভূমিকাকেও গুরুত্ব দিয়ে বলেন, প্রয়োজনে বিদ্যালয়গুলি অস্থায়ী ত্রাণশিবির হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে। এই বিষয়ে স্কুল পরিদর্শক ও সার্কল ডেভেলপমেন্ট কো-অর্ডিনেটরদের নির্দেশনা জারি করার কথাও জানান তিনি, যাতে জরুরি অবস্থায় তাৎক্ষণিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা যায়।