ধর্মনগরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি, পুলিশ সুপারের কার্যালয় চত্তরে বিধায়কের ওপর আক্রমণের চেষ্টা

বরাক তরঙ্গ, ২৭ নভেম্বর : দু’দিন ধরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে ধর্মনগরে। বৃহস্পতিবার দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধী দলের বিধায়কের ওপর আক্রমণের চেষ্টা—এমন নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হল খোদ জেলা পুলিশ সুপারের অফিস প্রাঙ্গণে। প্রশাসনের চোখের সামনে এমন ঘটনায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়—এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে।

বুধবার উত্তর ত্রিপুরা জেলা কংগ্রেস ভবনে শাসকদল বিজেপির কর্মীরা ভাঙচুর চালায় এমন অভিযোগ ওঠে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আজ সকালে কৈলাসহর থেকে কংগ্রেস বিধায়ক বিরজিৎ সিনহা, বদুজ্জামান সহ একদল প্রতিনিধি দল ধর্মনগরে জেলা কংগ্রেস অফিস পরিদর্শন করেন। পরিস্থিতি পর্যালোচনা শেষে তাঁরা জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।

কিন্তু পুলিশ সুপারের দফতর থেকে বেরোতেই ঘটে অভাবনীয় ঘটনা। বিজেপির পতাকা হাতে একদল শাসকদলের সমর্থক আচমকাই বিধায়ক বিরজিৎ সিনহা ও তাঁর সঙ্গী কংগ্রেস কর্মীদের উদ্দেশে গালিগালাজ শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়—সমর্থকদের একাংশ বিধায়কের দিকে আক্রমণাত্মকভাবে তেড়ে আসে বলে অভিযোগ। হট্টগোল, ধাক্কাধাক্কি ও উত্তেজিত স্লোগানে মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় জেলা পুলিশ সুপারের অফিস চত্তর।

বুধবার সিপিআইএমের মিছিলের উপর আক্রমণ করে শাসক দলের লোকরা। একই ভাবে সেসময় তাদের হাতে বিজেপির ঝাণ্ডা ছিল। অপরদিকে কংগ্রেস কার্যালয়ে প্রবেশ করে শাসক দল আশ্রিত দুর্বৃত্তরা ভয়াবহ হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনায় সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের ১০ থেকে ১২ জন আহত। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক তিনজনের। পরিস্থিতি থমথমে।

মঙ্গলবার গভীর রাতে ধর্মনগর জেলা কংগ্রেস ভবনে নাশকতার অভিযোগকে কেন্দ্র করেই এই উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে। এদিন সকালে জেলা কংগ্রেসের উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে কংগ্রেস ভবনের সামনে রাস্তা অবরোধে বসে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রশাসন দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই একই স্থানে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মীরাও রাস্তা অবরোধে বসে। তাদের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে এবিভিপি নেতা অনিকেত দেবের উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত জেলা যুব কংগ্রেস নেতা জাহাঙ্গির হোসেনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। এদিকে জেলা কংগ্রেস সভাপতি দিগ্বিজয় চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, বুধবার দুপুরে বিজেপি-আশ্রিত কয়েক শতাধিক দুষ্কৃতিকারী কংগ্রেস ভবনে ঢুকে হামলা চালায় এবং ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *