ধলাইয়ে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে ছাই বসতঘর  

রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ২ এপ্রিল : বুধবার সন্ধ্যা রাতে এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেল একটি নবনির্মিত বাড়ি। ঘটনাটি ঘটেছে ধলাই থানা এলাকার ইসলামাবাদ গ্রামের পশ্চিম ইসলামাবাদে। আগুনে হতদরিদ্র রহিম উদ্দিনের টিন ও বাঁশদিয়ে নির্মিত ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে এসে দাঁড়িয়েছে পরিবারটি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে সাতটা নাগাদ রহিম উদ্দিনের বাড়িতে কোনোভাবে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা পুরো ঘর গ্রাস করে ফেলে। গ্রামের ভেতরের দিকে এবং সড়ক থেকে বেশ দূরে হওয়ায় খবর পেয়েও ফায়ার সার্ভিসের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। এছাড়াও আশেপাশে জলের কোনো উৎস না থাকায় আগুন নেভানোর কোনো উপায় ছিল না। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ছুটে আসা শত শত গ্রামবাসী অসহায়ভাবে চোখের সামনে বাড়িটি পুড়ে যেতে দেখে।

জানা যায়, মূলত দক্ষিণ ধলাইয়ের সপ্তগ্রামের বাসিন্দা হতদরিদ্র রহিম উদ্দিন স্ত্রী মজমুন্নাহার বেগম এবং দুই সন্তানকে নিয়ে হাওয়াইথাং গ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। মজমুন্নাহারের বাবা বাজিদ আলি বড়ভূইয়া সম্প্রতি জামাই ও মেয়েকে ইসলামাবাদে নিজ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একখণ্ড জমি দান করেন। সেই জমিতেই রহিম উদ্দিন টিন ও বাঁশ দিয়ে একটি ঘর নির্মাণ করেন এবং বুধবারই তাঁরা নতুন ঘরে মালপত্র নিয়ে প্রবেশ করেন। রান্নার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার না থাকায় রাতের খাবারের জন্য মজমুন্নাহার তাঁর দশ ও ছয় বছর বয়সী দুই ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে যান, যা তাদের নতুন ঘর থেকে ৫০০ মিটার দূরে অবস্থিত। মজমুন্নাহারের স্বামী রহিম উদ্দিন কিছু জিনিসপত্র আনার জন্য হাওয়াইথাংয়ের ভাড়া বাড়িতে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময়েই এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নজমুন্নাহারের স্বামী রহিম উদ্দিন জানান, নতুন ঘরটিতে এখনও পর্যন্ত তারা চুলায় আগুন ধরাননি এবং সেখানে কোনও বিদ্যুৎ সংযোগও ছিল না। তিনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, কেউ শত্রুতা করে তাদের ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। আকস্মিক এই অগ্নিকাণ্ডে ঘরের সমস্ত আসবাবপত্র, জামাকাপড় এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে যাওয়ায় পরিবারটি একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।

এমতাবস্থায়, সর্বহারা পরিবারটি সরকারি সাহায্যের জন্য কাতর আবেদন জানিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও এই হতদরিদ্র পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর এবং প্রয়োজনীয় সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।