বরাক তরঙ্গ, ২৬ ডিসেম্বর : বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দীপুচন্দ্র দাসকে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অপবাদে নির্মমভাবে হত্যা করার বিরুদ্ধে এবং সেদেশের সরকারকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে শিলচরে একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও, যুব সংগঠন এআইডিওয়াইও এবং মহিলা সংগঠন এআইএমএসএস। দুপুর ১২টায় উকিলপট্টি থেকে তিনটি সংগঠনের কর্মী সমর্থকরা ” দীপুচন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই, মৌলবাদ নিপাত যাক, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ধ্বংস হোক ” ইত্যাদি শ্লোগান দিতে দিতে শহরের রাজপথ পরিক্রমা করে শহীদ ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে পৌঁছান। সেখানে বক্তব্য রাখেন এআইএমএসএস এর জেলা সম্পাদক দুলালী গাঙ্গুলি, এআইডিএসও’র জেলা সভাপতি স্বাগতা ভট্টাচার্য, এআইডিওয়াইও’র জেলা সভাপতি দীলিপকুমার রী প্রমুখ। বক্তারা বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বস্ত্র কারখানার শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অজুহাতে মৌলবাদীরা নৃশংসভাবে হত্যা করে। সভ্য সমাজের কোন বিবেকবান মানুষ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখে চুপ থাকতে পারে না। মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক শক্তির এইধরনের নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সর্বত্র ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক চেতনা সম্পন্ন মানুষ এগিয়ে এসে প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন। তারা বলেন সাম্প্রতিক কালে পরিলক্ষিত হচ্ছে যে সাধারণ জনগণের মধ্যে চূড়ান্ত বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে যার বলি হচ্ছে সাধারণ শ্রমজীবী জনসাধারণ। আইন, আদালতকে তোয়াক্কা না করে নির্মমভাবে বিনা বিচারে মানুষকে মিথ্যা অপবাদে হত্যা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এই ধরণের ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য ইউনুস সরকারকে সকল ধরনের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য দাবি জানান। তারা আরও বলেন যে সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারে না সেই সরকার ব্যর্থ সরকার, সেই সরকার যথার্থ সরকার নয়।
বক্তারা এও বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে বাংলাদেশের নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে যখন ভারতবর্ষে জাতি-ধর্ম-ভাষা-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই রাজপথে বেরিয়ে প্রতিবাদ করছেন ঠিক তখনই কেরলে, ওড়িষ্যায় শ্রমজীবী মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা এবং আসামের কার্বি আংলং এ ঘরের মধ্যে অগ্নিসংযোগ করে হত্যার ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের সরকারকে অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে নিরপরাধ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য জোরালোভাবে দাবি জানান। বক্তারা অমানবিক হত্যা ও ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষ বন্ধ করার দাবিতে সকল অংশের জনগণকে সোচ্চার হতে আহ্বান জানান। আজকের এই প্রতিবাদী কার্যসূচিতে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এআইএমএসএস এর খাদেজা বেগম লস্কর, রিম্পি বাগতী, এআইডিওয়াইও’র জেলা সম্পাদক পরিতোষ ভট্টাচার্য, এআইডিএসও’র জেলা কমিটির সহ সভাপতি আপন লাল দাস, জেলা সম্পাদক স্বপন চৌধুরী প্রমুখ।


