পাথারকান্দির রাঙ্গামাটির প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সচল করতে মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকপত্র কংগ্রেস নেতার

মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি। 
বরাক তরঙ্গ, ২৮ নভেম্বর : দীর্ঘদিনের অবহেলা আর অচলাবস্থার অন্ধকার ভেদ করে রাঙ্গামাটির মানুষের মনে নতুন আশার আলো জ্বালালেন সমাজসেবী তথা কংগ্রেস নেতা পঙ্কজ নাগ। সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকার হাজারো মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল রাঙ্গামাটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু করতে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উদ্দেশ্যে স্মারকপত্র দিলেন পঙ্কজবাবু।

বহু বছরের জট খুলে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা ফিরিয়ে আনার এই উদ্যোগে এলাকায় এক নতুন প্রত্যাশার স্ফুরণ দেখা দিয়েছে। শ্রীভূমি জেলার পাথারকান্দি বিধানসভার লোয়াইরপোয়া ব্লকের অসম-মিজোরাম-ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী রাঙ্গামাটি এলাকার দীর্ঘদিনের জনদাবিকে সামনে রেখে আবারও সক্রিয় ভূমিকা নিলেন করিমগঞ্জ জেলা কংগ্রেস নেতা তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী ও বাজারিছড়ার জিপির প্রাক্তন প্রয়াত জিপি সভাপতি প্রতাব নাগের ছেলে পঙ্কজ নাগ। শুক্রবার তিনি মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মারকপত্র প্রেরণ করেন।এদিন তিনি শ্রীভূমি জেলা সদর সিভিল  হাসপাতাল পরিদর্শন করে নবনিযুক্ত যুগ্ম স্বাস্থ্য সঞ্চালক মতীন্দ্র সূত্রধরের হাতে স্মারকপত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেন। পাশাপাশি স্মারকপত্রের প্রতিলিপি প্রেরণ করা হয় রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী অশোক সিংহল এবং বিধানসভার বিরোধী নেতা দেবব্রত শইকিয়ার কাছেও, যাতে বিষয়টি দ্রুত গুরুত্ব পায়। স্মারকপত্রে পঙ্কজ নাগ উল্লেখ করেন রাঙ্গামাটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অসম-মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত হওয়ায় এটি শুধু পাথারকান্দি বিধানসভারই নয়, বরং সীমান্তবর্তী বহু প্রত্যন্ত গ্রামবাসীর ভরসাস্থল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে স্থাপিত হলেও, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স এবং সহকারী কর্মীর মারাত্মক সঙ্কটে পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। পর্যাপ্ত অবকাঠামো থাকলেও জনবল না থাকায় সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কার্যত থমকে গেছে।

তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্যবিভাগের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক এমবিবিএস ডাক্তার ও প্রশিক্ষিত নার্সদের নির্দিষ্ট সময়ে গ্রামীণ এলাকায় পরিষেবা প্রদান বাধ্যতামূলক হলেও রাঙ্গামাটির ক্ষেত্রে এই নীতি অমান্য করা হচ্ছে। ফলে এলাকার হাজারো মানুষকে ন্যূনতম স্বাস্থ্যপরিষেবা পেতে বহু দূরের হাসপাতালের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। বিশেষ করে জরুরি পরিস্থিতিতে এই অবস্থার জেরে বহু রোগী মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। পঙ্কজ নাগ স্মারকপত্রে দাবি জানান অবিলম্বে রাঙ্গামাটি পিএইচসিতে স্থায়ী মেডিক্যাল অফিসার, নার্স ও সহযোগী কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে পুনরায় কার্যকর করা হোক। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে খুব শিগগিরই এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুনরায় চালু হবে এবং সীমান্ত এলাকার জনগণ তাদের প্রাপ্য স্বাস্থ্যসেবা ফিরে পাবে।জনগণের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অনেকেই বলেন, “রাঙ্গামাটি পিএইচসি চালু হলে শুধু অসংখ্য পরিবারই উপকৃত হবে না, বরং পুরো সীমান্তাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবার নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক মহলেও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী পঙ্কজ নাগ ও এলাকার সচেতন মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *