বরাক তরঙ্গ, ১৭ ডিসেম্বর : অরুণাচল প্রদেশে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের পরিবারবর্গকে এককালীন আর্থিক সাহায্যের চেক প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার তিনসুকিয়ার গেলাপুখুরি চা-বাগানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারগুলোর হাতে এই চেক তুলে দেন।
উল্লেখ্য, ৮ ডিসেম্বর অরুণাচল প্রদেশের ভারত–চিন সীমান্তবর্তী অঞ্চল আঞ্জাও জেলার হায়ুলিয়াংয়ে একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনাটি সারা দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। অসমের তিনসুকিয়া থেকে কর্মসূত্রে যাওয়া ২০ জন শ্রমিককে বহনকারী একটি ট্রাক দুর্ঘটনায় পতিত হলে ২০ জনের মৃত্যু হয়। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান একজন শ্রমিক।
মৃত ২০ জনের মধ্যে গেলাপুখুরি চা-বাগানের ১৩ নম্বর লাইনের ১৬ জন, গটংয়ের একজন, লিম্বুগুরির একজন, ধেলাখাট চা-বাগানের একজন এবং ট্রাকটির চালক ন-পুখুরির বাসিন্দা ছিলেন। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা প্রথমে দুর্ঘটনায় নিহত ২০ জনের পরিবারবর্গের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় দুই মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এরপর অসম সরকার পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে এককালীন সাহায্য হিসেবে প্রত্যেককে ৫ লক্ষ টাকা এবং আহত ব্যক্তিকে ১ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার পক্ষ থেকেও নিহতদের পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষ টাকা করে প্রদান করা হবে।

সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অসম সরকার নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে চেক প্রদান করছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার ২ লক্ষ টাকা করে দেবে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন নিশ্চিত করবে যাতে নিহতদের পরিবার অরুণোদয় প্রকল্পের সুবিধা ও রেশন কার্ড পায়। চা-বাগানে পরিবারের একজনকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার বিষয়টি বিধায়ক দেখবেন।”
তিনি আরও বলেন, “অসম থেকে অরুণাচল প্রদেশে বহু শ্রমিক কাজের জন্য যান—এটি একটি বড় সমস্যা। সবার জন্য কর্মসংস্থান দেওয়া সম্ভব নয়। তাই অসমে শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে বেকারত্ব কমাতে হবে।”
এদিকে, অরুণাচল প্রদেশের আঞ্জাও জেলায় সংঘটিত এই দুর্ঘটনার ঘটনায় তৃতীয় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শ্রমিকবাহী ট্রাকটির মালিক ভুষণ কুমার যাদব ওরফে ভুষণ টায়ককে বিহারের ছাপরা থেকে বিহার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অতি শীঘ্রই ধৃত ভুষণ কুমার যাদবকে তিনসুকিয়ায় আনা হবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে ম্যারাথন জেরা চালানো হবে।
এর আগে তিনসুকিয়া পুলিশ সিরাজুল আহমেদ ও চাইরুদ্দিন আলিকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এই দুই অভিযুক্ত শ্রমিকদের একত্রিত করে অরুণাচল প্রদেশে পাঠিয়েছিলেন।


