১৯ শে মে-র আগে ‘ভাষা শহিদ স্টেশন’ নামকরণ বাস্তবায়ন চাইল বিডিএফ
বরাক তরঙ্গ, ৭ মে : ১৯৬১ সালের ১৯শে মে মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার আন্দোলনে একাদশ শহিদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল শিলচর রেলস্টেশন। এরপর থেকে এই বিশেষ দিনটিতে শ্রদ্ধা, আবেগের সাথে পালিত হয় বরাকে। এবারের ১৯শে মে-র আগে বরাকের দীর্ঘদিনের দাবি ‘ভাষা শহিদ স্টেশন’ নামকরণের বাস্তবায়নের দাবিতে সরব হল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
এক প্রেস বার্তায় ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, ইদানিং বরাক উপত্যকার পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য যেভাবে বিভিন্ন প্রকল্প ঘোষণা করা হচ্ছে তার জন্য অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী ও সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা। ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণের ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের আবেদন-নিবেদন, আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে কেন্দ্রীয় সরকার ও রেল মন্ত্রক ভাষা শিলচর রেলস্টেশনের নাম পরিবর্তন করে ‘ভাষা শহিদ স্টেশন’ করার ব্যাপারে আপত্তি নেই বলে জানায় এবং রাজ্য সরকারের কাছে এই নামের লিপি বিভিন্ন ভাষায় তৈরি করে পাঠানোর নির্দেশ জানিয়ে চিঠি দেয়। কিন্তু বহুদিন ধরে এই ফাইলটি দিশপুরে আটকে আছে। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিগত দিনে ভাষা শহিদ স্টেশন স্মারক স্মরণ সমিতির একটি স্মারকলিপির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তীকে এই ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া স্বত্ত্বেও কোন রহস্যজনক কারণে এই দাবি আজও বাস্তবায়িত হয়নি। প্রদীপ দত্তরায় তাই বিডিএফ এর পক্ষ থেকে এবছর ১৯ শে মের আগে এই সামান্য বিষয় বাস্তবায়ন করে বরাকবাসীর আবেগকে মান্যতা দেবার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, বরাকের মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলন কখনোই একা বাংলাভাষীদের আন্দোলন ছিল না। ডিমাসা, মণিপুরি, চা-জনজাতি সহ বরাকের সর্বস্তরের মানুষ এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। এবং এই আন্দোলন প্রকৃতার্থে প্রত্যেক ভাষিক জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার জন্য উৎসর্গিত। তাই ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণ বরাকের সব জনগোষ্ঠীর আবেগ অনুভূতির সাথে যুক্ত। সরকারকে তাই অবিলম্বে এই ব্যাপারে উদ্যোগী হবার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সর্বানন্দ সোনোয়াল ১৯শে মে-তে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি ভাষা শহিদ স্মারক সংগ্রহশালা তৈরি করার ঘোষণা করেন এবং এই ব্যাপারে পরবর্তীতে আট কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়। কিন্তু কোন অজ্ঞাত কারণে এই বিষয়ে আজ অবধি কোন অগ্রগতি হয়নি। তিনি বলেন, এবার ১৯ মে-কে সামনে রেখে এই ব্যাপারেও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুক সরকার। তিনি বলেন এই উদ্যোগ নেওয়া হলে তা দুই উপত্যকার মধ্যে সম্প্রীতি ও সমন্বয় তৈরি করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া একাদশ শহিদের সরকারি স্বীকৃতি এবং তাদের পরিবারবর্গের প্রতি সরকারি অনুদান দেবার দাবিও এদিন জানিয়েছেন তিনি। বিডিএফ এর পক্ষ থেকে হৃষীকেশ দে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন।