রাজ্যসভায় ‘ভাষা শহিদ স্টেশন ‘ নামকরণের দাবি উত্থাপনের জন্য সাংসদ কণাদের প্রশংসা বিডিএফের

বরাক তরঙ্গ, ১০ ডিসেম্বর : দীর্ঘদিন পর রাজ্যসভায় শিলচর রেল স্টেশনের ‘ভাষা শহিদ স্টেশন’ নামকরণের দাবিতে সরব হওয়ার জন্য সাংসদ কণাদ পুরকায়স্থকে সংগ্রামী অভিনন্দন জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, বরাক উপত্যকার নির্বাচিত সাংসদরা এখানকার স্থানীয় সমস্যা নিয়ে সংসদে নীরব থাকেন বলে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয় নাগরিকদের। এর বিপরীতে দাঁড়িয়ে সাংসদ কনাদ পুরকায়স্থ যেভাবে ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণের দাবি সংসদে উত্থাপন করেছেন তা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রশংসনীয়। তাই তাঁরা এজন্য অবশ্যই তাঁকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

প্রদীপ দত্তরায় এদিন আরো বলেন যে বর্তমান সাংসদের পিতা তথা বিজেপি দলের প্রাক্তন সাংসদ কবীন্দ্র পুরকায়স্থও এর আগে ‘ভাষা শহিদ স্টেশন’ নামকরণের দাবি সংসদে উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু তৎকালীন সরকারের তরফে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন যে বিষয়টি নিতান্তই সামান্য। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রেলমন্ত্রক ২০১৬ সালেই এই দাবিকে মান্যতা দিয়ে শুধু এই নামের প্রতিলিপি কি হবে সেই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে একটি গ্যাজেট নোটিফিকেশন জারি করার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকেই রাজ্য সরকারের তরফে টালবাহানা চলছে। প্রদীপ দত্তরায় বলেন, এবারের সফর কালেও এই ব্যাপারে প্রতিনিধিদল দেখা করলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে আগামী সফরে এনিয়ে আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হবে। বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন যে এই সামান্য বিষয়কে অনর্থক দীর্ঘায়িত করে এতদঞ্চলের সার্বিক আবেগকে অবমাননা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে বরাকের নাগরিকরা ভিক্ষুক নন এবং ‘ভাষা শহিদ স্টেশন’ নামকরণের দাবিকে ঝুলিয়ে রেখে কোন একক ভাষা নয়, সমস্ত মাতৃভাষা প্রেমী মানুষকে অবমাননা করছে সরকার। তাই এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যসভায় সাংসদ কনাদ পুরকায়স্থ এর এই দাবি উত্থাপন অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি আরও বলেন, তাঁরা আশাবাদী যে সাংসদের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবেন এবং অবিলম্বে এই দাবি বাস্তবায়িত হবে।

তিনি বলেন, যদি তা না হয়, তবে বরাক বাসীকে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে। কারণ এটি বরাকের আত্মসম্মানের প্রশ্ন। তিনি বলেন যে মুষ্টিমেয় কিছু ছিদ্রান্বেষী যারা কোন ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত ছাড়া এই স্টেশনের বিকল্প নাম প্রস্তাব করছে,আদৌ এই দাবি উত্থাপিত না হলে তাঁরা কি এটা করত এটা ভেবে দেখা প্রয়োজন,এবং একই সাথে তাঁরা ডিমা হাসাওয়ের কোন রেলস্টেশনের নাম  বরাকের কোন স্বাধীনতা সংগ্রামীর নামাঙ্কিত হলে মেনে নেবে কিনা সেই প্রশ্নও তোলা জরুরি।

প্রদীপ দত্তরায় বলেন, এসব প্রসঙ্গই অবান্তর। এবং এটা সবাইকে এবার বুঝে নিতে হবে যে বরাকবাসী হিসেবে আমরা সহনশীল ও বহুত্বে বিশ্বাসী মানে এই নয় যে আমরা নির্বোধ বা ভয়ভীত। সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক তবে তাঁর সাথে নিজেদের অধিকার যাতে অবদমিত না হয়,তা নিশ্চিত করার পূর্ণ অধিকার অবশ্যই আমাদের আছে। তাই এক্ষেত্রে আর কোন আপষ নয় , এই মনোভাব নিয়ে সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে ,বলে এদিন মন্তব্য করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *