মণ্ডলা চিত্রের মাধ্যমে বালাজী এঁকে বিশ্ব রেকর্ড, গিনিস জয়ী সোনালীর
তাঁর দখলে এবার যুক্ত হল আরও ৫৪ টি বিশ্ব রেকর্ড____
বরাক তরঙ্গ, ১৬ সেপ্টেম্বর : বরাবরই গণ্ডির বাইরে গিয়ে তিনি কিছু করতে চেয়েছেন। আর ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে সফলতাও পেয়েছেন তিনি। তিনি হলেন হায়দরাবাদ নিবাসী বরাক উপত্যকার সুসন্তান গিনিস রেকর্ডধারী ওডিসি নৃত্য শিল্পী সোনালী আচার্য। এবার একই সঙ্গে ৫৪টি বিশ্বরেকর্ড গড়ার স্বপ্ন পূরণ করে সবাইকে চমকে দিলেন এই নৃত্য শিল্পী। পায়ে অস্ত্রোপচারের জন্য তিনি দীর্ঘ দিন থেকে প্রফেশনাল ডান্স থেকে দূরে আছেন। তবে মনে প্রাণে শিল্পী সবসময়ই নতুন কিছু করার তাগিদ থাকে আর এবার সোনালী আচার্য নতুন রেকর্ড গড়ার জন্য ৫৪ টি রেকর্ড সংস্থার কাছে আবেদন করলেন। এই লক্ষ্যে তিনি ‘মন্ডলা চিত্র’ শিল্পকে বেছে নেন এবং তৈরী করেন “ভগবান শ্রী বালাজী” র ছবি। যেটি ১১ ফুট ৩ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যে এবং ৭ ফুট ৩ ইঞ্চি প্রস্থে। চিত্রটি তৈরী করতে তিনি ব্যবহার করেন ৭০ সেন্টিমিটার x ৫৬ সেন্টিমিটারের ২৫টি চার্ট পেপার, এ্যাকরোলিক রং, সাধারণ তুলি এবং মন্ডলা তুলি ও বিভিন্ন কলম। তিনি এই শিল্পকর্ম সম্পূর্ণ করেন ৫৪ ঘন্টায়।
পরবর্তীতে হায়দরাবাদের বিশিষ্ট শিল্পী সংস্থা ‘জয় জওয়ান জয় কিষান’ সোনালী আচার্যকে তেলেঙ্গানার সর্বোচ্চ শিল্পী পুরস্কার ‘কলারত্ন’ এবং স্বর্ণকঙ্কন দিয়ে সংবর্ধনা দেন। এই কলারত্ন পুরস্কার যে কোন শিল্পীর স্বপ্ন থাকে বলে জানালেন সোনালী আচার্য।
তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই নাচ, গান ও আঁকা বুকির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। তাছাড়া দুর্ভাগ্যবশত ২০১৪ সালে তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন এবং তাঁর হাটু অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসক চিরদিনের জন্য নৃত্য থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। কিন্তু সোনালী আচার্য মত শিল্পীকে নিয়তিও দমিয়ে রাখতে পারেনি। অদম্য উৎসাহ, নিরলস চেষ্টা এবং অসম্ভবকে সম্ভব করার জেদ তাঁকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তিনি নিজেকে চিত্রশিল্পী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সংকল্প নেন। আজ তিনি আবার নিজেকে প্রমাণ করলেন চিত্রশিল্পী হিসেবে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর হায়দরাবাদের প্রেসক্লাবে তাঁকে মানপত্র সহ ৫৪টি বিশ্বরেকর্ডের স্মারক ও পদক দিয়ে সম্মান ভূষিত করেন হায়দরাবাদের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা যেমন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ড. তেনুগোপালাচারী, দিল্লী সচিবালয়ের মুখ্য সচিব ড. সুব্রমনিয়ম, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রেকর্ড সংস্থার আধিকারিক ড. বমন্না রাও, তেলেগু ফিল্ম অভিনেতা শ্রীনিবাস পাসুনুরি এবং অন্যান্যরা। তেলেঙ্গানার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার হয়।
এদিকে, সোনালীর হাইলাকান্দিবাসী সোনালী আচার্যের সাফল্যে গর্বিত এবং আগামী আরও অনেক সাফল্যের জন্য শুভেচ্ছা কামনা করি।
তাঁর ৫৪টি বিশ্বরেকর্ডের তালিকাগুলি হল যথাক্রমে আব্দুল কালাম এক্সিলেন্সি বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, অল আর্টফর্ম শিল্পী বিশ্ব রেকর্ডস বুক, অল আর্টফর্ম মাস্টার্স বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, ভারত বুক অফ রেকর্ডস, ভারত ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, বম্বে বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, ক্যালচারেল বিশ্ব রেকর্ড আন্তর্জাতিক, দিল্লি বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, বিশ্ব রেকর্ডের ভক্তিমূলক ও আধ্যাত্মিক বুক, এক্সিলেন্স বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, এক্সেলেন্সি ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, এক্সিলেন্ট বিশ্ব রেকর্ড, বিশ্ব রেকর্ডের ফ্যান্টাস্টিক/কল্পিত বুক, ফিউচার স্টার বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, ফিউচার স্টারস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, গ্যালাক্সি বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, জিনিয়াস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, জিনিয়াস গ্লোবাল রেকর্ডস, হাই রেঞ্জ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস আন্তর্জাতিক, অনার বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, ইন্ডিয়া ইন্ডিয়ান রেকর্ড হোল্ডারস বুক, ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, বিশ্ব রেকর্ডের অনুপ্রেরণামূলক বুকস, ইন্টারন্যাশনাল ওয়ান্ডার রেকর্ডস, কালাকার বুক অফ রেকর্ডস, কিং অ্যান্ড কুইন ফাউন্ডেশন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, মিস বুক অফ রেকর্ডস, এম আর এস বুক অফ রেকর্ডস জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রেকর্ড হোল্ডার বুক, নোবেল ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, ওডিশা বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, অস্কার বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, পাইওনিয়ার বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, প্রাইম সুপ্রিম বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, রাইজিং স্টারস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, সাকাল কাল গুরুভুলা প্রপঞ্চ পুস্তকম, সাকাল কালকারুল প্রপঞ্চ পুস্তকম, সংস্কৃতি সম্প্রদায় বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, সেনসেশনাল বুক অফ রেকর্ডস, বিশ্ব রেকর্ডের আধ্যাত্মিক বই, বিশ্ব রেকর্ডের প্রতিভা বুক, তেলুগু বিশ্ব রেকর্ড, টেম্পলস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, ঐতিহ্যগত বিশ্ব রেকর্ড আন্তর্জাতিক, ইউনিভার্সাল বুক অফ রেকর্ডস, ইউনিভার্সাল রেকর্ড হোল্ডার বুক, নারী বিশ্ব রেকর্ড, ওয়ান্ডার ইন্ডিয়া রেকর্ডস, বিশ্ব রেকর্ড অর্জনকারী বই ওয়ার্ল্ড রেকর্ড হোল্ডার বুক, ওয়ার্ল্ড রেকর্ড হোল্ডার অর্গানাইজেশন, বিশ্ব রেকর্ড বুক, বিশ্ব রেকর্ড বিশ্ব ও ওয়ার্ল্ড স্টারস বুক অফ রেকর্ডস।
প্রসঙ্গত সোনালী আচার্য হলেন একজন ওড়িশী নৃত্যশিল্পী। তাঁর জন্মস্থান হাইলাকান্দিতে। তিনি ২০১২ সালে ১২৫ জন নৃত্যশিল্পীকে নিয়ে একটানা ২৫ ঘন্টা ২৫ মিনিট রবীন্দ্রনৃত্য পরিবেশন করে ‘গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড’ গড়েছেন যা আজও অক্ষত। নৃত্যের তার আরও চারটি বিশ্বরেকর্ড এবং অসংখ্য দেশীয় রেকর্ড রয়েছে।