বরাকের বাঙালিদের মেরুদণ্ডহীন বলায় প্রশান্তের প্রতি তীব্র ক্ষোভ বিডিএফের
বরাক তরঙ্গ, ২৯ মে : আসাম বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে বরাকবাসীকে “মেরুদণ্ডহীন, বরাকি বাঙালি” অভিধা দিয়ে উভয় উপত্যকার সমন্বয়ের অন্তরায় বলে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিতর্কিত অধ্যাপক প্রশান্ত চক্রবর্তী। এই ধরণের মানসিকতার তীব্র প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে এই বিতর্ক নিয়ে বরাক বিজেপি তথা মুখ্যমন্ত্রীকে অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
বিডিএফ কার্যালয়ে আয়োজিত বৃহস্পতিবার এক সংবাদিক সম্মেলনে এই ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, প্রশান্ত চক্রবর্তী বা বাংলা সাহিত্যসভা রাজ্যের বাঙালিদের কোনওভাবেই প্রতিনিধিত্ব করে না। আর এই অধ্যাপক যেভাবে বরাকের বাঙালিদের অপমান করছেন তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, এই অবাঞ্ছিত বক্তব্যের জন্য অবিলম্বে তাঁকে গ্রেফতার করা উচিত। প্রদীপ দত্তরায় বলেন, অতীতে বাঙালি হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে যেভাবে বিভাজনের বিভিন্ন ছক কষা হয়েছে তেমনি এখন রাজ্যের বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে সুকৌশলে বিভাজনের চেষ্টা চলছে। এবং তাঁতে মদত দিচ্ছেন ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার কিছু বুদ্ধিজীবী এবং বরাক উপত্যকার কিছু রাজাকার বাঙালি। এদের সম্পর্কে বরাকবাসীকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রদীপ দত্তরায় আরও বলেন, যে বিডিএফ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায় কে এবং কিসের ভিত্তিতে ১৯ শে মে-র মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনে এঁকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেক্ষাগৃহে ভাষণ দেবার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ? এ ব্যাপারে উত্তর দিতে হবে তাঁদের।
বিডিএফ এর আরেক আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে বলেন, এই আবেগিক ব্যাপার নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে চায় বরাক বাসী। তিনি বলেন যেহেতু বরাকের জনগণ মুখ্যমন্ত্রীকে বিশেষ ভাবে সমাদর করে তাই আসাম বিশ্ববিদ্যালয় আসাম আন্দোলনের ফসল কিনা এর উত্তর তাঁর থেকে জানতে চায় বরাকবাসী।
হৃষীকেশ আরও বলেন, বরাক থেকে নির্বাচিত ১৫ জন বিধায়ক, ৩ জন সাংসদ এই ব্যাপারে নীরব কেন ? আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁরা এই ব্যাপারে মুখ খুলুক, অন্যথা আগামী নির্বাচনে বরাকের জনগণ ভোটে এঁদের বয়কট করবে।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, আকসার আন্দোলনে তৎকালীন বিজেপি দল সমর্থন জানিয়েছিল। আকসার উপদেষ্টা ছিলেন বিজেপি নেতা বিমলাংশু রায়। উপদেষ্টা ছিলেন এডভোকেট রাতুল দাস, মিহিরেশ ভট্টাচার্য। বিজেপি দল সক্রিয়ভাবে এই আন্দোলনে জড়িয়ে ছিল। সেই বিজেপি দল আজ নীরব কেন সেটাও জানতে চায় বিডিএফ। তিনি বলেন বরাকের তিন জেলায় বিজেপি দলের জিলা কমিটি রয়েছে। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যুতে অবস্থান স্পষ্ট করুক তাঁরা। তিনি বলেন ভাষা আন্দোলনের সময় বরাকের তিন জেলার কংগ্রেস নেতৃত্ব দলমতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল। তাই বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে তিন জেলার বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে তাঁদের ঘোষণা করা উচিত।