প্ৰথম বিশ্ব ধ্যান দিবস আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, কৰ্মশালা নিরাময়ের

‘সুপ্ত প্ৰতিভা-আত্মশক্তি বিকশিত করে মেডিটেশন’

বরাক তরঙ্গ, ২৩ ডিসেম্বর : মানসিক শক্তি বিকাশ সহ আনন্দময় জীবন যাপনের বাৰ্তা দিয়ে প্ৰথম ‘বিশ্ব ধ্যান দিবস’ উদযাপন করল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়৷ শনিবার বিপিন পাল মিলনায়তনে হয় অনুষ্ঠান৷ আয়োজনের যৌথ উদ্যোগ নিয়েছিল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান যোগ অ্যাসোসিয়েশন ও শিলচর নিরাময় যোগ শিক্ষা সংস্থান৷ সহযোগিতায় ছিল এনএসএস, এনসিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোৰ্টস বোৰ্ড৷ মেডিটেশন সেশন অৰ্থাৎ মূল পৰ্ব পরিচালনায় ছিল ‘নিরাময়’৷ এটি নিরাময় যোগ শিক্ষা সংস্থানের কেন্দ্ৰীয় অনুষ্ঠানও ছিল৷ বৈদিক মন্ত্ৰের সঙ্গে প্ৰদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়৷ প্ৰদীপ প্ৰজ্জ্বলন করেন অতিথি সহ আয়োজকরা৷ ছিলেন স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-র প্ৰাক্তন ডিন সুদীপ্ত রায়, নিরাময়-এর চেয়ারম্যান ডাঃ অজিত কুমার ভট্টাচাৰ্য, মুখ্য সংযোজক দিব্য গীতানন্দ, ইন্ডিয়ান যোগ অ্যাসোসিয়েশনের উত্তর-পূৰ্বের জোনাল কো-অৰ্ডিনেটর তথা নিরাময়ের ডিরেক্টর শতাক্ষী ভট্টাচাৰ্য, আইকেএস-এর ডিরেক্টর অধ্যাপক গঙ্গাভূষণ এম মলাংকাল, অধ্যাপক এম তিনেশ্বরী দেবী, সিআইকেএস-এর সঙ্গে যুক্ত প্ৰোফেসরদের মধ্যে ড. জয়িতা দেব, ড.অজিতা তিওয়ারি ও মুনমুন চক্রবৰ্তী৷

স্বাগত ভাষণে, আয়োজনের উদ্দেশ্য ও তাৎপৰ্য ব্যাখ্যা করেন অধ্যাপক গঙ্গাভূষণ৷ যোগ’কে বিশ্বের দরবারে শীৰ্ষে পৌঁছে দিতে ভারতের গুরুত্বপূৰ্ণ ভূমিকার বিষয়টিও বিস্তারিত তুলে ধরেন৷ তাঁর কথায়, পাঁচ হাজার বছরেরও প্ৰাচীন ভারতীয় ‘যোগ’ পরম্পরাকে আজ সমগ্ৰ বিশ্ব গ্ৰহণ করেছে৷ ২১ জুন তারিখকে ‘যোগ দিবস’ হিসেবে ন’বছর আগে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনাইটেড ন্যাশন অৰ্গানাইজেশন৷ এবার যোগ-এর সাত নম্বর অঙ্গ ‘ধ্যান’কেও আলাদা করে স্বীকৃতি দিল৷ ২১ ডিসেম্বর তারিখকে ‘বিশ্ব ধ্যান দিবস’ ঘোষণা করল ইউএন৷ এটা সঠিক অৰ্থেই ঐতিহাসিক৷ আর আসাম বিশ্ববিদ্যালও প্ৰথম বিশ্ব ধ্যান দিবস উদযাপনের সাক্ষী থাকল৷ নিজের সুপ্ত প্ৰতিভা, শক্তিকে বিকশিত করতে গেলে ধ্যানের যে বিকপ্ল নেই, তাও উল্লেখ করেন গঙ্গাভূষণ৷ তাঁর কথায়, নিজেকে জানার, নতুনভাবে আবিষ্কার করার রাস্তাও খুলে দেয় এই মেডিটেশন অভ্যাস৷

প্ৰথম বিশ্ব ধ্যান দিবস আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, কৰ্মশালা নিরাময়ের

নিরাময়-এর চেয়ারম্যান ডাঃ অজিত কুমার ভট্টাচাৰ্য পড়ুয়াদের জন্য মেডিটেশন অনুশীলনের প্ৰয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন৷ তিনি বলেন, পড়ুয়াদের একাগ্ৰতা বৃদ্ধি ও আত্মবিশ্বাস বিকাশে এই অভ্যাস জরুরি৷ আজকের আধুনিক যুগে চাপমুক্ত থাকতেও ধ্যান সহ যোগ প্ৰক্রিয়ার বিকপ্ল নেই, মন্তব্য ডাঃ অজিতের৷ অনুষ্ঠানে অনিবাৰ্য কারণে অংশ নিতে না পারলেও শুভেচ্ছা বাৰ্তা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচাৰ্য অধ্যাপক ড.রাজীব মোহন পন্থ৷ তাঁর বক্তব্য, শারীরিক, মানসিক ও অধ্যাত্মিক বিকাশে যোগ শিক্ষা প্ৰোমোশনে আসাম বিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে৷ আগামীতেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে৷

প্ৰথম বিশ্ব ধ্যান দিবস আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, কৰ্মশালা নিরাময়ের

দ্বিতীয় পৰ্বে ছিল ধ্যানের সেশন৷ পরিচালনা করেন শতাক্ষী ভট্টাচাৰ্য৷ বিভিন্ন কলেজ থেকে পড়ুয়ারা অংশ নেয় সেশনে৷ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এনসিসি, এনএসএস স্বেচ্ছাসেবক, ক্যাডেটরা৷ শিক্ষক-অশিক্ষক কৰ্মচারীদেরও স্বতঃস্ফৰ্ত অংশগ্ৰহণ ছিল৷ সব মিলিয়ে ধ্যান অভ্যাস করেন প্ৰায় দুই শতাধিক৷ শতাক্ষী ভট্টাচাৰ্য ধ্যানের উপকারিতা সম্পৰ্কেও বুঝিয়ে দেন প্ৰশিক্ষাৰ্থীদের৷ বলা যায় এক আনন্দময় আবহে ধ্যান দিবসের তাৎপৰ্য অনুভব করেন প্ৰত্যেকেই৷ ওইদিনের উদ্বোধনী পৰ্বের সঞ্চালনা করেন সোশ্যাল ওয়াৰ্ক বিভাগের রিসাৰ্চ স্কলার রূপজ্যোতি বরগোহাঁই৷ যোগ-এর ওপর ডকুমেন্টারিও প্ৰদৰ্শিত হয়৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সান জানানো হয় নিরাময় এর পদাধিকারী ও রিসৰ্সাস পাৰ্সনদের৷

প্ৰথম বিশ্ব ধ্যান দিবস আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, কৰ্মশালা নিরাময়ের

অন্যদিকে, শিলচরে ঐতিহ্যবাহী গুচরণ কলেজ সহ শিলচর রাঙ্গিরখাড়ির জিও সেন্টারেও নিরাময় যোগ শিক্ষা সংস্থানের পরিচালনায় হয় ধ্যান দিবসের আয়োজন৷ শনিবার সকাল সাড়ে ন’টায় অনুষ্ঠান উদ্বোধন হয় জিসি কলেজে৷ শিক্ষক-শিক্ষিকা, পড়ুয়ারা অনুশীলন করেন ধ্যান৷ কলেজের তরফে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন ড. সবিতা সিনহা, ড. স্বরূপা ভট্টাচাৰ্য, ড. সুমিতা ভট্টাচাৰ্য ও ড. সন্ধানী নাথ৷ জিও সেন্টারে ধ্যান কৰ্মশালা শু হয় সাড়ে এগারোটা থেকে৷ জিও-র আধিকারিক-কৰ্মীরা অংশ নেন৷ ধ্যান দিবসের দুই অনুষ্ঠান পরিচালনায় নিরাময়ে তরফে ছিলেন শতাক্ষী ভট্টাচাৰ্য, রাহুল চক্রবৰ্তী ও ড. তুহিন দেশমুখ্য৷ ওইদিন দিন ধ্যান সেশনের আগে প্ৰশিক্ষকদের পুষ্পস্তবক, উত্তরীয় দিয়ে বরণও করেন আয়োজকরা৷

Author

Spread the News