ভাষা সেনানী পরিতোষ পাল চৌধুরীর ৯১ তম জন্ম বার্ষিকী পালন
পিএনসি, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৬ জানুয়ারি : এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক পরিতোষ পাল চৌধুরীর ৯১ তম জন্ম বার্ষিকী পালন করা হয় শুক্রবার শিলচরের সুভাষ নগরে। পরিতোষ পালচৌধুরী স্মৃতি পর্ষদের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরিতোষবাবুর নাতি নাতনিরা কেক কেটে জন্মদিনের শুভারম্ভ করেন। জনসংযোগ বিভাগের প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা তথা পরিতোষ পাল চৌধুরী স্মৃতি পর্ষদের কার্ষকরী সভাপতি হারাণ দে অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন। এতে সংস্থার সম্পাদক বিপ্লব পাল চৌধুরী, কবি সাহিত্যিক কস্তুরী হোম চৌধুরী, পম্পা পাল চৌধুরী সহ পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে হারাণ দে বলেন, পরিতোষ পাল চৌধুরী ছিলেন বরাক-সুরমা উপত্যকার একজন ক্ষণজন্মা পুরুষ। যার সমগ্র জীবন অতিবাহিত হয়েছে বরাক উপত্যকাকে বঞ্চনা থেকে মুক্ত করার জন্য। বরাক পৃথকীকরণের জন্য তিনি দিল্লিতে অনেক দৌঁড়ঝাপ করেছিলেন। তিনি বিরামহীন সংগ্রাম থামাননি।
কস্তুরী হোম চৌধুরী বলেন, ভাষা সেনানী পরিতোষ পাল চৌধুরী ছিলেন একজন সংগ্রামী মানুষ। যার সারা জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন বরাক উপত্যকার মানুষের মুক্তির জন্য। সাহিত্য প্রীতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এত ব্যস্ত জীবনের মধ্যেও পরিতোষবাবুর সাহিত্যের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। বরাক উপত্যকাকে সাহিত্যের দিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে তাঁর।
বিপ্লব পাল চৌধুরী বলেন, তার বাবা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভক্ত। ভাষা আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক ছিলেন। তাঁর রচিত অনেক বইয়ের মধ্যে ‘কাছাড়ের কান্না’ অন্যতম। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসের অধীনে আনার জন্য একবার জোরদার প্রযাস নেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া ভাষা আন্দোলনের সময়ের অনেক তথ্য পূর্ণ অনেক কাগজপত্র আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তথ্যচিত্র করার জন্য। কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি। তিনি কাছাড়ের কান্নাকে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলেবাসে ঢুকানোর জন্য এবং নিয়ে যাওয়া কাগজপত্র পুনরুদ্ধারের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে সকলের প্রতি আবেদন জানান।
প্রদীপ দাস বলেন, প্রয়াত পরিতোষ পাল চৌধুরীর মৃত্যু হয়েছিল দেশ নায়েক নেতাজির জন্মদিনে এবং জন্ম হয়েছিল প্রজাতন্ত্র দিবসে। দুই ক্ষেত্রেই দেশপ্রেমের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যা তাঁর বাস্তব জীবনেও দেখিয়ে গেছেন। এদিনের অনুষ্ঠানে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখেন গৌতম তালুকদার, জয় রায় ও নীল কমল দাস প্রমুখ। শ্রাবনী সরকারের কণ্ঠে ‘তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম নিবিড় নিভৃত পূর্ণিমানিশীথিনী’ গানটির মাধ্যমে এদিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়।