পুরোনো বিবাদের জের, দলবদ্ধ আক্রমণে গুরুতর আহত তিন
রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ১৬ জানুয়ারি : পুরোনো বিবাদকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হলেন তিনজন। ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে দক্ষিণ ধলাইয়ের জামালপুর গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান লস্কর পক্ষ ও লাল মুহাম্মদ আজাদের পক্ষের মধ্যে পুরোনো বিবাদ ছিল। গত তিনদিন আগে মজিবুরের পক্ষের আক্রমণে লালের ভাই তাজুল লস্কর গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরবর্তী সময়ে লাল মুহাম্মদ ভাই তাজুল লস্কর, মজিবুর সহ অন্যান্যদের অভিযুক্ত করে ধলাই থানায় এজাহার দায়ের করেন। এজাহারের ভিত্তিতে ধলাই পুলিশ মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করে।
বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটার দিকে মজিবুরের ছেলে খুশবুল লস্কর বাজার করতে নিজেদের ব্যক্তিগত বাহন নিয়ে স্থানীয় খুলিছড়া বাজারে যান। অভিযোগ মতে খুশবুল বাজারের উদ্দেশ্যে যান তা প্রত্যক্ষ করে লাল বাহিনী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মজিবুরের বাড়ির রাস্তায় আগে থেকে ওৎপেতে বসে থাকেন। বিকেল সাড়ে তিনটার কাছাকাছি সময় খুশবুল বাজার করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির রাস্তায় পৌঁছতেই লাল বাহিনী খুশবুলের গাড়িতে আক্রমণ করেন। দলবদ্ধ হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করলে গাড়ি সমেত দুর্ঘটনার কবলে পড়েন খুশবুল। দুর্ঘটনায় গাড়ির সামনের ভাগ সম্পূর্ণ দুমড়ে মুচড়ে যায়। কোনক্রমে গাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রান রক্ষা করতে পাশের ঘরে ঢুকে পড়েন খুশবুল। হামলাকারীরা পেছন ধাওয়া করে ঘরের ভেতরে ঢুকে তার উপর হামলা চালায়। ঘটনা প্রত্যক্ষ করে এগিয়ে আসেন কাকা নুরুল হক ও ছোট ভাই রাহুল হোসেন। হামলাকারীরা তাদের উপরও আক্রমন চালায়। দলবদ্ধ আক্রমণে নুরুল হক লস্করের একটি হাতের কয়েকটি আঙুল সম্পূর্ণ কেটে যায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। আঘাতপ্রাপ্ত হন খুশবুলের ছোট ভাই রাহুলও। এরই মধ্যে হাল্লা চিৎকারে অসংখ্য মানুষ জড়ো হতে শুরু করলে কেটে পড়েন হামলাকারীরা। আহত নুরুল জানান, হামলাকারীদের হাতে বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র ছিল, যার মধ্যে দুইজনের হাতে বন্দুকও ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি। ঘটনার খবরে দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ধলাই থানার সাব ইন্সপেক্টর প্রাঞ্জল লকড়া। পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। প্রাথমিক তদন্তের পর দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি হেফাজতে নেয় পুলিশ।

এদিকে, আহতদের ধলাই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে আঘাত গুরুতর হওয়ায় নুরুল হক লস্কর ও খুশবুল লস্করকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় রাহুলকে। এ ঘটনায় মজিবুরের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো এজাহার জমা পড়েনি বলে জানা যায়। দুই গোষ্ঠী পরপর দুই বার আক্রমণে জড়িয়ে পড়ায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে এলাকা জুড়ে। স্থানীয়দের আশঙ্কা দুই পক্ষে আবারও সংঘর্ষে জড়াতে পারেন।