বরাক তরঙ্গ, ২৯ ডিসেম্বর : সোনাইয়ের পূর্ব সোনাই এলাকার হাতিখাল বাজারে জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে সংঘটিত দশম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আক্তার হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এ ঘটনায় কচুদরম থানার পুলিশ আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। এই নিয়ে মামলায় মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হলো। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শাহাব উদ্দিনের ছেলে আমিনুল আহমেদ (১৭)–কে আটক করা হয়। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে সোমবার তাকে আদালতে পেশ করা হলে আদালত হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর শুক্রবার রাতে কচুদরম থানার পুলিশ অভিযানে চার অভিযুক্ত—রাজু আহমেদ, আতাবুর রহমান, রইস আলি ও শাহাব উদ্দিনকে গ্রেফতার করে।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, গত ১৫ ডিসেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ পূর্ব সোনাইয়ের হাতিখাল বাজার এলাকায় জমি জবরদখলকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী এক পক্ষের হামলায় প্রতিপক্ষের ৯ জন আহত হন। ওই সংঘর্ষে দশম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আক্তার গুরুতর আহত হন। আহতদের শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ ডিসেম্বর বুধবার রাতে শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সাদিয়া আক্তারের মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে তার ভাই শোয়েব আহমেদ ও কাকা আব্দুল গফুর গুরুতর আহত হন। বর্তমানে শোয়েব কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না এবং আব্দুল গফুর এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সাদিয়ার মৃত্যুর খবর বৃহস্পতিবার সকালে এলাকায় পৌঁছাতেই হাতিখাল বাজার ও আশপাশে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ঘটনায় জড়িত সকল দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। সন্ধ্যা ৬টায় কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাদিয়ার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলার তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে—এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে, নিহত সাদিয়ার পিতা আব্দুল হেকিম আহমেদ ও কাকা বক্তার হুসেন আহমেদ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তদন্ত প্রক্রিয়ায় কচুদরম থানা ও কাছাড় জেলা পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বাকি পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।


