নয়া জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের পথ প্রশস্ত করা হল : সৌরভ

এআইডিএসও’র ৭২তম প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্য ভিত্তিক ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত গুয়াহাটিতে_____

বরাক তরঙ্গ, ২৮ ডিসেম্বর : জাতীয় শিক্ষা নীতি, ২০২০ প্রণয়ন করে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ, কেন্দ্রীকরণ এবং সাম্প্রদায়িকীকরণের পথ প্রশস্ত করেছে। এই শিক্ষা নীতি শিক্ষা খণ্ডের স্বাধিকারের উপর এক বিরাট আঘাত হেনেছে। রবিবার গুয়াহাটিতে ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও’র ৭২তম প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্য ভিত্তিক ছাত্র সমাবেশ এ কথা বলেন কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সভাপতি সৌরভ ঘোষ। এ দিন প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং মানবতা রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে আজ গুয়াহাটির লক্ষ্মীরাম বরুয়া সদনে রাজ্য ভিত্তিক ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের রাজ্য কাউন্সিলের সভাপতি হিল্লোল ভট্টাচার্যের সভাপতিত্ব ছাত্র সমাবেশে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সভাপতি সৌরভ ঘোষ। সমাবেশে তিনি জাতীয় শিক্ষা নীতি (এনইপি) ২০২০ নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এই নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকীকরণ, অতিমাত্রায় কেন্দ্রীকরণ এবং সাম্প্রদায়িকীকরণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বলেন, জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০ মূলত শিক্ষাকে একটি জনকল্যাণমূলক অধিকার থেকে সরিয়ে লাভজনক পণ্যে রূপান্তর করার রূপরেখা তৈরি করেছে। এর ফলে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার উপর চাপ বাড়বে এবং সাধারণ ও প্রান্তিক মানুষের উচ্চশিক্ষায় প্রবেশাধিকার ক্রমশ সংকুচিত হবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

এ ছাড়া আরেক আমন্ত্রিত বক্তা তথা সংগঠনের অসম রাজ্য কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতি অজিত আচার্য বলেন, এআইডিএসও ছাত্রছাত্রীদের ন্যায় সঙ্গত দাবি বিশেষ করে শিক্ষার ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও বৈজ্ঞানিক চরিত্র অক্ষুন্ন রাখার দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অসমের উগ্র প্রাদেশিকতাবাদী শক্তির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি সবাইকে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। রাজ্য পরিষদের সহ-সভাপতি পল্লব পেগু সমাপ্তি ভাষণ প্রদান করেন।

এ দিন সমাবেশের শুরুতে “তোরে মোরে আলোকরে যাত্রা” গানটি সংগঠনের শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশন করেন। সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন রাজ্য কাউন্সিলের সম্পাদক হেমন্ত পেগু। সভায় কার্বি আংলঙে সহিংসতা বন্ধ করে শান্তি, সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনা, দেরাদুনে ত্রিপুরার ছাত্র অ্যাঞ্জেল চাকমার হত্যার নিন্দা জানিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সমস্ত অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রদান এবং তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ন্যায় সঙ্গত দাবি অভিলম্বে মেনে শৈক্ষিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে তিনটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *