কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক অধ্যাপক বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য আর নেই
বরাক তরঙ্গ, ২৭ সেপ্টেম্বর : বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং সাহিত্য পত্রিকার প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য আর নেই। বুধবার বেলা ১১-৪৫ মিনিটে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী বিশিষ্ট লেখিকা শিখা ভট্টাচার্য সহ ছেলে এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) দলের অসম রাজ্য কমিটির সদস্য ময়ূখ ভট্টাচার্য, মেয়ে, জামাতা, পুত্রবধূ, নাতি, নাতিনী সহ অসংখ্য গুণমুগ্ধদের।
বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য পেশায় হাইলাকান্দির এসএস কলেজের পদাৰ্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি নিরলস সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়ে সমাজে বিশেষ স্থান অধিকার করেন। তার প্রচেষ্টায় ‘সাহিত্য’ লিটিল ম্যাগাজিন দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ দশক ধরে প্রকাশিত হয়ে চলেছে যা বরাক উপত্যকার একটি বিরলতম ঘটনা।
তিনি নিজেকে শুধু সাহিত্য রচনায় আবদ্ধ রাখেননি। তিনি যৌবনে মহান মার্ক্সবাদী দার্শনিক শিবদাস ঘোষের চিন্তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বামপন্থী ভাবধারায় পরিচালিত গণ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদী শক্তির কুচক্রান্তের বিরুদ্ধে সংগঠিত বিভিন্ন আন্দোলন সহ শিলচর-লামডিং ব্রডগজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি, এনআরসি’র তৈরির নামে জনগণের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া ইত্যাদি আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও বরাক উপত্যকায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ক্ষুদিরাম প্রমুখ মনীষীদের জন্ম, মৃত্যু শতবর্ষ সহ প্রতি বছর অনুষ্ঠিত নানা অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার প্রয়াণে বরাক উপত্যকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।
গত মাসে চিকিৎসার প্রয়োজনে সপরিবারে কলকাতায় যাওয়ার পর হঠাৎ তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে পড়লে গত ২৬ আগস্ট তাঁকে সল্টলেকে অবস্থিত কলকাতা হার্ট ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটাল-এ ভর্তি করা হয়। ডেঙ্গু কমে যাওয়ার পর তিনি সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ছাড়া তিনি কিডনি জনিত রোগেও ভোগছিলেন।