মাছিমপুর সুবেদার বস্তিতে শত-কণ্ঠে গীতা পাঠ

পিএনসি, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৭ ডিসেম্বর : পশ্চিম কাছাড়ের মাছিমপুর সুবেদার বস্তিতে শত-কণ্ঠে গীতা-পাঠের এক ভব্য আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংস্কৃত ভারতী পূর্বোত্তর ভারতও সরস্বতী শিশু নিকেতনের যৌথ উদ্যোগে গীতা জয়ন্তী উপলক্ষে রবিবার সকাল ১১টায় শতাধিক কণ্ঠে গীতা-পাঠ অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. গোবিন্দ শর্মা এবং প্রধান অতিথি ছিলেন বনদুর্গা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত পণ্ডিত রামেশ্বর শাস্ত্রী। তাঁদের নেতৃত্বে সকাল ১১টায় বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ ও গীতা-ধ্যানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করা হয়। সবার আগে ড. বুদ্ধদেব পুরকায়স্থ স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন।

এরপর সরস্বতী বিদ্যানিকেতন উচ্চ মাধ্যমিক শাখার শিক্ষক উজ্জ্বল ঘোষ ও তাঁর ছাত্রছাত্রীরা গীতা-পাঠের সামষ্টিক অনুশীলন পরিচালনা করেন। প্রধান বক্তা ড. গোবিন্দ শর্মা তাঁর বক্তব্যে সংস্কৃত ভাষার সার্বজনীন গুরুত্ব ও গীতা-পাঠের আবশ্যকতার উপর জোর দিয়ে বলেন, “গীতা কেবল আমাদের ধর্মগ্রন্থ নয়; এটি জ্ঞান ও বিজ্ঞানের এক মহাসমুদ্র। প্রতিটি সনাতনী পরিবারে নিয়মিত গীতা পাঠ করা উচিত।”
প্রধান অতিথি পণ্ডিত রামেশ্বর শাস্ত্রী সমাজের সমগ্র উন্নতির জন্য গীতা-পাঠ ও সাংস্কৃতিক চর্চার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, “যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে চলি, তবে অল্প দিনের মধ্যেই অসমের প্রতিটি পরিবারে সংস্কৃত ভাষাকে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।”

অনুষ্ঠানে গুরুচরণ মহাবিদ্যালয়ের প্রাধ্যাপক ড. কেশব লুইটেল, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত অধ্যয়ন কেন্দ্রের শিক্ষক ড. উত্তম পালোয়ার, সংস্কৃত ভারতীর আঞ্চলিক উপমন্ত্রী কৃষ্ণা সিনহা, ড. বুদ্ধদেব পুরকায়স্থ, সরস্বতী বিদ্যানিকেতন ডলুর বিজ্ঞান শিক্ষক সুজয় ভট্টাচার্য, চন্দ্রশেখর গোয়ালা প্রমুখ বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন।
সরস্বতী শিশু নিকেতন ও বিবেকানন্দ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মঙ্গলাচরণ, স্বাগত গান, একক ও সমবেত গান পরিবেশন করে সকলের মন জয় করে। সরস্বতী শিশু নিকেতনের শিক্ষার্থী সৌরভ গোয়ালা শিব তাণ্ডব স্তোত্র আবৃত্তি করে বিশেষভাবে সকলকে আকৃষ্ট করে।

এলাকায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই আয়োজন দেখতে মাসিমপুর ও তার আশপাশের বহু মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বিবেকানন্দ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পঞ্চমী অধিকারী। শেষে চন্দ্রকুমার গোয়ালা সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং কল্যাণ মন্ত্রের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *