রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড শ্রীভূমিতে, পুড়ে ছাই

মোহাম্মদ জনি, শ্রীভূমি।
বরাক তরঙ্গ, ২ ডিসেম্বর : শ্রীভূমি শহরের ব্যস্ত তিলকচাঁদ রোডে গভীর রাতে ঘটে গেল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। চারদিকে নেমে এল আতঙ্কের ছায়া। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আচমকা ধোঁয়ার গন্ধে চমকে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন দাউদাউ করে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের ঘরবাড়িতে।

প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে মনে করছেন দমকল কর্মীরা। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়া মাত্রই দু’টি এলপিজি রন্ধন গ্যাস সিলিন্ডার একের পর এক বিস্ফোরিত হয়, ফলে আগুনের তাণ্ডব আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশের পুরো এলাকা, অঘটনের আশঙ্কায় ঘরছাড়া হন বহু বাসিন্দা।

আগুনের খবর পেয়ে মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পাঁচটি দমকলের ইঞ্জিন। সঙ্গে উপস্থিত হয় সদর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আগুন আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণে এলেও তিনটি পরিবারের সর্বস্ব রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তিলকচাঁদ রোডের বাসিন্দা মামন দাস, রূপক দাস এবং হিরক দাসের তিনটি বসতবাড়ি। তাদের ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিন সামগ্রী, সঞ্চিত অর্থ, মূল্যবান জিনিসপত্রসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সম্পূর্ণভাবে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকারও বেশি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, আগুন লাগার পর মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দমকল বাহিনীর তৎপরতা ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আরও ভয়াবহ বিপর্যয় এড়ানো গেলেও তিনটি পরিবারের জীবনের স্বপ্ন একরাতে ধুলোয় মিশে গেছে।

বর্তমানে ঘটনাস্থলে নিরাপত্তারক্ষীরা মোতায়েন রয়েছে। দমকল কর্মীরা আগুনের উৎস ও সঠিক কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে। অন্যদিকে ঘরবাড়ি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি—তাদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় মানুষজন।

শহরের বুকে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার সামান্য ত্রুটিও কত বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *