শিলচর শঙ্করমঠ ও মিশনে স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজের জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি

দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২২ নভেম্বর : শিলচর সোনাই রোড স্থিত শিলচর শঙ্করমঠ ও মিশনে যথাযোগ্য মর্যাদা ও সনাতনী ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হল স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজের ১১৭তম জন্মজয়ন্তী। শনিবার দিনব্যাপী নানা ধর্মীয় কর্মসূচিতে ভক্তদের মধ্যে উৎসবের আবহ তৈরি হয়।আয়োজক সূত্রে জানা যায়, ভোর ব্রাহ্মমুহূর্তে মঙ্গলারতির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয় শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠ, সকাল ১১টায় গুরু-ভজন, হনুমান চালিশা পাঠ ও গীতা পাঠ। দুপুর ১২টায় গুরুদেবের পূজা ও ভোগ নিবেদন সম্পন্ন হয়। দুপুর ১টায় অগণিত ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সমবেত প্রার্থনা ও অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে রাত ১০টায় শান্তিবাণী পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।

এদিন ভক্তদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন শঙ্করমঠ ও মিশনের কর্মাধ্যক্ষ শ্রীমৎ বিজ্ঞানানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ। তিনি বলেন, সনাতন ধর্মের আধ্যাত্মিক তত্ত্ব ও দর্শন আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমাদৃত। যুগে যুগে ধর্মের প্রতিষ্ঠা, অধর্মের বিনাশ ও সাধুজনের পরিত্রাণে ভগবানের আবির্ভাব ঘটে—এই সত্য শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতায় বর্ণিত। তিনি আরও বলেন, কলিযুগে মানুষ যখন পথহারা, তখন স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজ গীতার মর্মবাণী প্রচার করে সমাজকে আলোকিত করেছেন। তাঁর জীবনের মূল শিক্ষা ছিল শিবজ্ঞানে জীবসেবা ও গীতার কর্ম-জ্ঞান-ভক্তির সমন্বয়। সত্যই সুন্দর, সত্যই শক্তিধর—এই মন্ত্র তিনি হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন।পরিচালনা কমিটির সম্পাদক বিপ্লব কুমার দে জানান, স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজ মানবকল্যাণে দেশ-বিদেশে গীতা প্রচারকেন্দ্র, অসংখ্য মঠ, আশ্রম, অনাথ আশ্রম, দাতব্য চিকিৎসালয়, শঙ্করমঠ সংস্কৃত কলেজ, গোমাতা প্রকল্প, শিক্ষাসেবা ও সমাজউন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। এগুলো তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি।

অনুষ্ঠান পরিচালনায় সহযোগী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি রামু দেবনাথ, সহ-সম্পাদক সুজিত মিত্র, বরুণ দে, বিউটি দে, সুমন মিয়া, রূপন মিত্র, প্রিয়তোষ মিত্র (কাবুল), তপন দে, শিখা দে, মিতা দে, মিনতি মিয়া, পান্না মিত্র, রূপা দে, তুলি পাল, সঙ্গীতা সৃষ্টি পাল, প্রকাশ দাস, রাহি আচার্য ও স্নেহা রায় প্রমুখ। দিনভর অনুষ্ঠানস্থলে ছিল ভক্তদের ভিড়, পূজা-অর্চনা, ভজন ও গীতার আবহে মুখর হয়ে ওঠে পুরো শিলচর শঙ্করমঠ ও মিশন প্রাঙ্গণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *