মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ১৫ ডিসেম্বর : পাথারকান্দি কেন্দ্রের বাজারিছড়া এলাকায় গোমাংস বিক্রির ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দক্ষিণ–পূর্ব প্রান্তের গোরক্ষা বিভাগ। বাজারিছড়ার মাকুন্দা রোডে অবস্থিত আলি স্টোর্সে গোমাংস বিক্রির অভিযোগে প্রশাসনের উদাসীন আচরণে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এলাকাজুড়ে। এই প্রসঙ্গে গত ১৬ নভেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল শ্রীভূমি জেলার জেলাধিপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মুখ্যমন্ত্রী, অসম পুলিশের ডিজিপি এবং পশুপালন মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে একটি স্মারকপত্র প্রদান করে। একইসঙ্গে স্মারকপত্রের অনুলিপি শ্রীভূমি জেলার মাননীয় পুলিশ অধীক্ষকের দপ্তরেও জমা দেওয়া হয়।
স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের ১০ ডিসেম্বর বাজারিছড়া থানাধীন মাকুন্দা রোডের আলি স্টোর্স থেকে গোমাতার ছবি সংবলিত লেবেল লাগানো বিফ কারির একাধিক ডিব্বা বজরং দল লোয়ারপোয়া প্রখণ্ড ও স্থানীয় জনগণের উপস্থিতিতে বাজারিছড়া পুলিশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় দোকানের মালিক হামিদ আলিকে আটক করা হলেও, রহস্যজনক কারণে তাকে কোর্টে ফরওয়ার্ড না করে সেদিন রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়।উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ওই দোকানটি একটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় অবস্থিত এবং দোকানের মাত্র ৫০০ মিটারের মধ্যে তিনটি হিন্দু মন্দির রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দোকানে এই ধরনের কার্যকলাপ চললেও প্রশাসনের তরফে কার্যকর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি, অসম ক্যাটেল প্রিজার্ভেশন অ্যাক্ট, ২০২১–এর ধারাগুলি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হলে অভিযুক্তের জেল হওয়া অনিবার্য ছিল। অথচ প্রশাসনের এই নরম মনোভাব এলাকায় ক্ষোভ ও আশঙ্কার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। সংগঠনের মতে, এই ঘটনা শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাতই নয়, বরং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টাও।শুধু এই ঘটনাই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে পাথারকান্দি মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে বাজারিছড়া থানাধীন গ্রাম ও চা-বাগান এলাকায় গো-চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
রাতের অন্ধকারেই নয়, এখন প্রকাশ্য দিনের আলোতেও গো-চুরির ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। এর ফলে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, অথচ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এ বিষয়ে আসাম সরকার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিস্থিতির উপর তারা সতর্ক নজর রাখবে এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্তও নিতে পারে।
এদিন স্মারকপত্র প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেনবিশ্ব হিন্দু পরিষদ গোরক্ষা বিভাগের ক্ষেত্র প্রমুখ সমর ঘোষ, দক্ষিণ–পূর্ব প্রান্তের গোরক্ষা প্রমুখ পংকজ শ্যাম, শ্রীভূমি জেলা সংগঠন মন্ত্রী বিবেক পাণ্ডে, জেলা সভাপতি হিমাদ্রি দাস, সম্পাদক মহেশ ভট্টাচার্য, এবং প্রান্ত গোরক্ষা টোলির সিদ্ধার্থ দত্ত সহ অন্যান্য নেতৃত্ববৃন্দ।


