শিলচরের ব্রহ্মাকুমারী সেন্টারে কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারি, সরব নতুন পুরাতন সদস্যরাও
বিশ্বজিৎ আচার্য, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১ মে : শিলচরের ব্রহ্মাকুমারী সেন্টারে কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারির অভিযোগের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে বাঙালি নবনির্মাণ সেনা। ধর্মের নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ করার ছক জনসমক্ষে তুলে ধরেন এই সংগঠনটির কর্মকর্তারা ও ব্রহ্মাকুমারীর শিলচর শাখার নতুন পুরাতন সদস্য সহ শিলচরের সচেতন নাগরিকরা। এই কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে শিলচরের ব্রহ্মাকুমারী সেন্টারের প্রধান জ্যোতি কলিতার নাম।
অভিযোগ উঠেছে, জ্যোতি কলিতা আসমিয়া-বাঙালি জাতিগত বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে মূল ঘটনাটিকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক গুরুতর অভিযোগ। যার মধ্যে রয়েছে ৮৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগও।

জানা গেছে, কণিকা শর্মা নামের ওই বৃদ্ধা, যিনি একজন নিঃসন্তান অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী, বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে জীবনের শেষ সময়ের জন্য নিরাপত্তা ও যত্নের আশায় নিজের সমস্ত সঞ্চয় ও বাসভবনের উপরের তলাটি উইল করে ব্রহ্মাকুমারী সেন্টারের নামে দিয়ে দেন। উইলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল যে, তাঁর দেখভালের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেবে সংস্থাটি। কিন্তু ২০২২ সালের বিধ্বংসী বন্যায় যখন তাঁর নিচতলার ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়, তখন ওই সংস্থা থেকে কোনও সহায়তা পাননি তিনি। বাধ্য হয়ে তাঁকে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। সেই সময়েই জ্যোতি কলিতা তাঁর বাড়ির উপরের তলায় বসবাস শুরু করেন। বিষয়টি সামনে আসার পর বাঙালি নবনির্মাণ সেনা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কণিকা শর্মার কাহিনী প্রকাশ্যে আনে এবং এই প্রতারণার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রীতম দেব স্পষ্টভাবে বলেন, আমরা কোনও ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরোধী নই, কিন্তু প্রতারণার বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কণিকা শর্মা নিজেও সংবাদ সম্মেলন করেন এবং তাঁর দুঃখের কাহিনী তুলে ধরেন। অভিযোগ ওঠার পর জ্যোতি কলিতা পুলিশের সাহায্য নেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

বাঙালি নবনির্মাণ সেনার দাবি, অতি দ্রুত এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কণিকা শর্মার সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে এবং জ্যোতি কলিতাকে এই প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। এই ঘটনার পর স্থানীয় মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।