চারদিনব্যাপী রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সূচনা শিবালিক পার্কে

দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৫ মে : বিশ্বকবি  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শিবালিক পার্ক ডেভলপমেন্ট কমিটির চারদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হল। রবিবার শিবালিক পার্ক দুর্গা মণ্ডপে চারদিনব্যাপী সূচনা অনুষ্ঠান উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কমিটির সহ-সভাপতি ডাঃ শিশিরাংশু দাস মজুমদার বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক মহাসাগরের মত অতল, অসীম এক বিশাল অধ্যায়। তাঁর জীবনাদর্শ, দর্শনাবলী, সৃষ্টিশৈলী সম্পর্কে বলা শুরু করলে শেষ করা যায় না। তিনি ছিলেন একজন কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, সঙ্গীতজ্ঞ, নাট্যকার ও চিত্রশিল্পী। কী নেই তাঁর সৃজনশীল সৃষ্টিতে ! তাঁকে ‘গুরুদেব’, ‘কবিগুরু’, ‘বিশ্বকবি’ ইত্যাদি অভিধায় ভূষিত করা হয়।

চারদিনব্যাপী রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সূচনা শিবালিক পার্কে

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্য জানান, তিনিই একমাত্র কবি যিনি দুই দেশের জন্য জাতীয় সঙ্গীত লিখেছেন। ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘জনগণমন’ এবং বাংলাদেশের ‘আমার সোনার বাংলা’ দুটি গানই তাঁরই রচনা। এমনকী শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতও রবীন্দ্রনাথ রচিত একটি বাংলা গানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল বলে দাবি করেন অনেকে। তিনি নীতিগত বিষয় হিসাবে জাতীয়তাবাদ এবং সামরিকবাদের বিরোধী ছিলেন এবং এর পরিবর্তে আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ এবং বহু-সাংস্কৃতিকতা, বৈচিত্র্য এবং সহনশীলতার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি নতুন বিশ্ব সংস্কৃতি তৈরির প্রচার করেছিলেন। আহ্বায়ক অঞ্জন স্বামী বলেন, সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ হলেও রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। একাধারে সঙ্গীতজ্ঞ, কথা সাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, দার্শনিক, প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক। নিজের সময়ের চেয়েও এগিয়ে ছিল তাঁর চিন্তাভাবনা। তাই তো তাঁর অমর সৃষ্টিগুলির আজও মানব সমাজে একই জায়গা রয়েছে। বিশ্বের নানা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয় রবীন্দ্রনাথের দর্শন। তাঁর চিন্তাভাবনা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।

চারদিনব্যাপী রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সূচনা শিবালিক পার্কে

সূচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাবুগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস পাল, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী সুদীপ্ত দেবরায় প্রমুখ। এরপর উপস্থিত সবাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন এলাকার সঙ্গীত শিল্পীরা। এরপর শুরু হয় বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও রবীন্দ্রনৃত্য প্রতিযোগিতা।বিকেল চারটায় রবীন্দ্র সঙ্গীতের প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যা সাতটায় পাড়ার শিল্পীদের দ্বারা পরিবেশিত সমবেত রবীন্দ্র সঙ্গীত, সন্ধ্যা ৭-৩০ মিনিটে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী পঙ্কজ নাথ, বিশ্বজিৎ রায়, চৌধুরী এবং সুদীপ্তা ভট্টাচার্যের কন্ঠে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করা হয়। এ দিন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সহ-সভাপতি সন্ধ্যা দাস, সদস্য প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অমিয় সূত্রধর সহ অন্যান্যরা।

Author

Spread the News