বরাক উপত্যকার উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ’ গঠন
পিএনসি, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২২ এপ্রিল : বরাক উপত্যকার সার্বিক উন্নয়নের দাবিতে রবিবার শিলচর সদরঘাটে আয়োজিত এক সভায় ঐতিহাসিক উদ্যোগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল ‘বরাক উপত্যকা উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ’। উদ্যোক্তারা জানান যে এটি কোনো সংগঠন নয়, বরং ব্যক্তি ও সংগঠনসমূহের জন্য একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম— যেখানে সকলে মিলিত কণ্ঠে উপত্যকার উন্নয়নের জন্য দাবি তোলা যাবে।
এই মঞ্চের নেতৃত্বে রয়েছেন মনোনীত ৭ জন আহ্বায়ক। তাঁদের মাধ্যমে ফোরাম ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবির রূপরেখা নির্ধারণ করেছে, যেগুলোর বাস্তবায়ন বরাক উপত্যকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মঞ্চের প্রধান দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে আসন্ন বর্ষার পূর্বেই ৬ নং জাতীয় সড়ক (শিলচর-গুয়াহাটি হাইওয়ে, মেঘালয় হয়ে) পুনরুদ্ধার; পূর্ব-পশ্চিম করিডোরের অংশ (৪৮.৮ কিমি, হরেঙ্গাজাও-নিরিমবাংলা, জাতীয় সড়ক নম্বর ২৭) ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূৰ্ণ করা এবং এই প্রকল্পের মাসিক অগ্রগতির রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জনসমক্ষে আনার দাবি; বরাপানি-শিলচর এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের বিডিং প্রক্রিয়া ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে শেষ করা (বাজেট: ২৫,০০০ কোটি); বিকল্প রেলপথ (লংকা-মইনারবন্দ, শিলচর) প্রকল্পের স্থান চূড়ান্ত ও বিডিং প্রক্রিয়া আগস্ট ২০২৫-এর মধ্যে সম্পন্ন করা; শিলচর রেলস্টেশনের অতিরিক্ত হিসেবে দুধপাটিল এলাকায় রেল ষ্টেশন স্থাপন; যেহেতু বর্তমান স্থানে সম্প্রসারণ সম্ভব নয় এবং নতুন ট্রেন পরিষেবা চালু করার পথে বাধা সৃষ্টি করছে; গামন ব্রিজ (বদরপুর, সড়ক নম্বর ৬:) অবিলম্বে সংস্কার -যা দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে;. বরাক নদীকে ব্যবহার করে জলপথ সংযোগ গড়ে তোলা;শিলচরের জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ; শিলচরে কার্যকর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন’ এবং শিলচরের শিববাড়ি রোড এলাকায় এলিভেটেড করিডোর প্রকল্পে গতি আনা ও নিয়মিত ফলো-আপ।
ফোরাম সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনকে আহ্বান জানিয়ে বলেছে— যদি কেও এই দাবিগুলির সাথে একমত হন ও বরাক উপত্যকার ভবিষ্যৎ উন্নয়নে সহমত পোষণ করেন, তবে একটি সমর্থনপত্র ঐক্যবদ্ধ মঞ্চে পাঠান। যার দ্বারা এই সকল সমর্থন একত্রিত করে প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন কতে পারে।

এদিনের প্রথম সভায় উপস্থিত থেকে তাঁদের সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেন বরাকের সুপরিচিত দুই ব্যক্তিত্ব কবি সাহিত্যিক অতীন দাশ এবং প্রবীণ সাংবাদিক তথা সমাজসেবী হারাণ দে। এছাড়া অংশ নেন রাজু দাস, প্রীতম দেব, রাহুল দেব, জয়ন্ত সিকদার, অনলকুমার দাস, বিশ্বজিত সেন, রামানুজ ভট্টাচার্য, মনোজ বিশ্বাস, বাসুদেব শর্মা, শান্তনু সূত্রধর, অমিতাভ দেব, দিবাকর ভট্টাচার্য, অমিলাভ দাশ, অনির্বাণ ভৌমিক সহ অন্যান্যরা।