গরুখুটিতে উপস্থিত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান মুখ্যমন্ত্রীর
বরাক তরঙ্গ, ২১ জুলাই : গরুখুটিতে উপস্থিত হলেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “২০২১ সালে ৭ জুন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে প্রথমবার গরুখুটিতে এসেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসও হয়নি তখন। কংগ্রেস দলের নেতারা দখলদারদের পক্ষ নিয়েছিল। গরুখুটির ইতিহাস ১৯৮৩ সালের। সেই সময় গরুখুটিকে রক্ষা করতে সাহস দেখানো হয়েছিল। তখন ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গরুখুটিতে সফল উচ্ছেদ আমাদের সাহস জুগিয়েছিল।
গরুখুটির পরে আমরা বরচলা, লামডিং, বটদ্রবা, চাপার, পাইকানে উচ্ছেদে সফল হয়েছি। আমরা ১ লাখ ২৯ বিঘা জমি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করতে পেরেছি। এখন হাতি-মানুষ সংঘর্ষ নেই। ধীরে ধীরে পাইকান সবুজ হয়ে উঠবে। সন্দেহভাজন বাংলাদেশিদের কাছ থেকে জমি উদ্ধারের সংকল্প নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য অনেক দূরে। আমরা এখন পর্যন্ত অল্প জমিই উদ্ধার করতে পেরেছি। অসম আন্দোলনের শহীদদের কাজ অসম্পূর্ণ ছিল। আমরা প্রতিটি ইঞ্চি জমি সন্দেহভাজন বাংলাদেশিদের কাছ থেকে উদ্ধার করব। কারও রক্তচক্ষুকে আমরা ভয় পাই না। অসম আন্দোলনের শহীদদের জন্য আমরা থামব না। অসমিয়া জাতি দুর্জয়, অপরাজেয়।
শরীরের এক বিন্দু রক্ত থাকতে আমরা লড়াই করব। যদি সামনে হিমালয় দাঁড়ায়, তাও আমরা ভেদ করতে পারব। জাতির মুক্তির পথ গরুখুটিই দেখিয়েছে। আমরা আবারও মুঘলদের পরাজিত করব। লাভ-লোকসানের হিসাব করে কাউকে উচ্ছেদের হাত থেকে বাঁচানো যাবে না। আমাদের একমাত্র সংকল্প জাতিকে দখলমুক্ত করা। ২১ জুলাই জাতির আত্মনির্ভরতার দিন। গরুখুটি কারো দয়া বা অনুগ্রহের প্রকল্প নয়। গরুখুটি প্রমাণ করে, অসমীয়া কখনো পরাজিত হয় না। আজ গরুখুটি চাঁদের আলো দিচ্ছে, ভবিষ্যতে সূর্যের আলো দেবে। যাতে ভবিষ্যতে কোনও সন্দেহভাজন নাগরিক জমি দখল করতে না পারে। আজ থেকে দশ বছর পরে মানুষ গরুখুটি প্রকল্প দেখতে আসবে। আমাদের যুদ্ধ এক-দু’দিনের নয়, এটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ হবে।”**
তিনি আরও জানান, গরুখুটি প্রকল্পটি কুরুওয়াল পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হবে। গরুখুটিতে স্থানীয় যুবক-যুবতীদের জন্য কৃষি বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয় স্থাপন করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। গরুখুটির কৃষক সেনানীদের ভাতা ২০০০ টাকা করে বাড়ানো হবে। গরুখুটি অসমীয়া জাতির পবিত্র তীর্থস্থান। ধুবড়ির মতো জেলাগুলিতে খিলঞ্জিয়া (স্থানীয় ভূমিপুত্র) মানুষের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
১ আগস্ট থেকে আর্ম লাইসেন্সের জন্য অনুমতি নেওয়া যাবে। গরুখুটির জন্য ১০ জন আবেদন করতে পারবে। এবার উচ্ছেদের লক্ষ্য গোলাঘাট। “আমার চোখে এখন চড়াইয়ের চোখে লক্ষ্য” – বলেন মুখ্যমন্ত্রী। “আমি অন্য কিছু ভাবি না। আমার জীবনের লক্ষ্য একটাই – চরৈবেতি চরৈবেতি (অর্থাৎ, অবিরাম এগিয়ে চলা)।”