হালাম জনগোষ্ঠীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব মানিকবন্দে
মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ৫ জানুয়ারি : অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও হালাম জনগোষ্ঠীর দুদিবসীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব পালিত হল পাথারকান্দি কেন্দ্রের মানিকবন্দে। এবার উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের ত্রিপুরা, মিজোরাম ও অসমের এই জাতি গোষ্ঠীর প্রতিনিধি সহ লোকজন সামিল হন ১৮তম এই সামাজিক অনুষ্ঠানে। মূলত নিজেদের কৃষ্টি সংস্কৃতির প্রদর্শন সহ ভামী প্রজন্মদের অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে এই সমাবেশ বলে জানান আয়োজকরা। এতে এই ক্ষুদ্র জনজাতির সামাজিক অগ্রগতির বিষয়ে দিশা নির্ধারন করার লক্ষ্যে অভিমত ব্যক্ত করে থাকেন সমাজের প্রধানরা।এই দুদিবসীয় অনুষ্ঠান সম্পর্কে আয়োজকরা জানান শনিবার দুপুর থেকে বিশাল এই সমাবেশের সূচনা হয়। সূচনাতে ভারত মাতার প্রতিকৃতির সামনে প্রদীপ প্রজ্বলন ও পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। তৎপরবর্তীতে তাঁদের নিজ সমাজের কালিম কবুর অর্থাৎ সমাজপতিদের বরণ সহ পরম্পরাগত পোশাক পড়িয়ে যথাযথ সম্মান প্রদান করা হয়। পরে নিজ সম্প্রদায়ের নৃত্য গীত প্রদর্শিত করেছেন স্থানীয় ও বহিরাগত শিল্পীরা। পাশাপাশি এই অধিবেশনে হালাম জনগোষ্ঠীর বেশভূষা সহ যুগ যুগ ধরে তাঁদের পৃথক ব্যবহায্য সামগ্রী সহ পরম্পরাগত পরিধেয় কাপড় বোনার সরঞ্জামেরও প্রদর্শনী করেছেন উদ্যোগতারা।
রবিবার সকাল আটটা থেকে তাঁদের ধার্মিক বিধি বিধান মেনে আরাধ্য দেবতার পূজার্চ্চনা অনুষ্ঠিত হয়।অতপর সম্মেলনে উপস্থিত অতিথিদের বরণ ও পরিচয় পর্ব সম্পন্ন হয়।পরবর্তীতে মুঙ্গীর চরেইয়ের পৌরহিত্যে শুরু হয় আলোচনা পর্ব। এতে বক্তারা এই জনজাতির উন্নতিকল্পে বিশদ বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।তৎপরবর্তীতে ফের প্রতিযোগিতা মূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এতে শিশু শিল্পী সহ যুবারা অংশ নেয়। বিকালে কিছু সময় বিরতির পর পুনরায় সন্ধ্যা থেকে যথারীতি শুরু হয় অধিবেশনের অন্তিম পর্যায়ের কার্যক্রম।
অনুষ্ঠানে জাতিগোষ্ঠীকে তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দৃষ্টি আকৰ্ষণ করেছেন আয়োজকরা। এই কর্মসূচিকে ঘিরে স্থানীয় এলাকায় এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। গোটা অধিবেশন সুশৃঙ্খল ভাবে পরিচালিত হওয়ায় আয়োজক কমিটির পক্ষে সভাপতি ও সম্পাদক যথাক্রমে মুঙ্গীর চরেই এবং বুলসাঙ্গীর চরেই সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এদিন মুখ্য অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কাছাড় জেলার অ্য়াসিস্টেন্ট কমিশনার ফুনলালঙীর চরেই তাছাড়া সমাজের অন্যান্য প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।