২২ নভেম্বর : আগামী বছরের গোড়াতেই পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাডু-সহ ৫ রাজের বিধানসভা ভোট। আর ওই ভোটের আগেই ফের বড়সড় ধাক্কা খাচ্ছে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, বিদ্রোহ সাংসদ শশী থারুরের নেতৃত্বে রাহুল গান্ধির কট্টর বিরোধী নেতারা (মণীশ তিওয়ারি, আনন্দ শর্মা, পি চিদম্বরম) নয়া দল গড়ে তুলতে চলেছেন।
মূলত কেরল ও তামিলনাডুতে যাতে কংগ্রেস জোর ধাক্কা খায়, সেই চেষ্টাই চালাচ্ছেন বদ্রোহী কংগ্রেস নেতারা। যদিও ওই দল ভোটে কোনও প্রার্থী দেবে না। কিন্তু লাগাতার কংগ্রেস ও গান্ধি পরিবারকে নিশানা করে যাবে। পরে পাততাড়ি গুটিয়ে বিজেপিতে সামিল হবে।
গত কয়েক মাস ধরেই বেসুরো শশী থারুর, আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারি, পি চিদম্বরমরা। অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে মোদি ভজনার পাশাপাশি প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি এবং পূর্বতন কংগ্রেস সরকারকে নিশানা করে চলেছেন। তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ শশি থারুর নাম না করে লাগাতার রাহুল গান্ধি এবং গান্ধি পরিবারকে কটাক্ষ করে চলেছেন। আর থারুরের মন্তব্য ও টুইটকে হাতিয়ার করে চলে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধিকে আক্রমণ শানিয়ে চলেছে বিজেপি নেতৃত্ব।
থারুরের পাশাপাশি আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারি ও পি চিদম্বরমরাও পরোক্ষে রাহুল গান্ধিকে নিশানা করে বিজেপির হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন। এর আগেই সোনিয়া গান্ধির নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কংগ্রেসের অন্দরেই আলাদা প্রেসার গ্রুপ তৈরি করেছিলেন গুলাম নবি আজাদ-কপিল সিবলরা। ওই গ্রুপে ছিলেন মণীশ তিওয়ারি ও আনন্দ শর্মারাও। পরে অবশ্য দল ছেড়ে দিয়েছেন কপিল। আর নতুন দল গঠন করেছেন গুলাম (কংগ্রেসিরা বলেন মোদির গোলাম) নবি আজাদ। কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে গান্ধি পরিবারের ঘনিষ্ঠ মল্লিকার্জুন খাড়গের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন শশী থারুর। যদিও গো-হারা হেরে যান তিনি। বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের দল ছাড়ার ইতিহাস রয়েছে। তামিলনাডুর দাপুটে কংগ্রেস নেতা জি কে মুপানারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস ভেঙে তামিল মানিলা কংগ্রেস নামে নয়া দল তৈরি করেছিলেন।পরে কংগ্রেসে ফেরেন।
সূত্রের খবর, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছেন শশী থারুর-সহ বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতারা। ওই বৈঠকেই ঠিক হয়েছে, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসকে জোর ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে এসে নতুন দল গড়বেন বিদ্রোহী নেতারা। যাতে ভোটের মুখে জোর ধাক্কা সামলাতে না পারে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। কর্মী-সমর্থকদের মনোবল তলানিতে গিয়ে পৌঁছয়। কেরল ও তামিলনাডুর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের একাধিক কংগ্রেস নেতাও বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রেখে চলেছেন। ওই নেতারা ঠিক করেছেন, আগামী বিধানসভা ভোটে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মেলানোর চেষ্টা করেন তাহলে মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুরে আলাদা করে প্রার্থী দেওয়া হবে। কংগ্রেসের অন্দরে যে ‘অল ইজ ওয়েল’ নয়, বিহারের ফলপ্রকাশের দিন সন্ধ্যাতেই তাঁর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিজেপি কার্যালয়ে জয় উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসে ফের বড়সড় ভাঙন ধরছে। বহু কংগ্রেসি নিরাশ হয়ে পড়েছেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে আস্থা নেই তাদের।’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ‘নাম না করে শশী থারুর-সহ বিদ্রোহী নেতাদের নতুন দল গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মোদি।
খবর : এই মুহূর্তে।


