লোডশেডিং, ল ভোল্টেজ নিয়ে সরব কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন
বরাক তরঙ্গ, ৩০ জুলাই : ঘন ঘন লোডশেডিং বন্ধ করা, নিরবচ্ছিন্ন ও নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা, ল ভোল্টেজ সমস্যার স্থায়ী সমাধান ও পুরোনো অকেজো বৈদ্যুতিক তার ও ট্রান্সফরমার পরিবর্তন করা ইত্যাদি দাবিতে সরব হল অল অসম ইলেকট্রিসিটি কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন এর কাছাড় জেলা কো-অর্ডিনেশন কমিটি। মঙ্গলবার কমিটি একটি স্মারকপত্র এপিডিসিএল শিলচর ডিভিশন-১ এর এজিএম এর উদ্দেশ্যে প্রদান করে। এজিএম এর অনুপস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী তা গ্রহণ করেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে রঞ্জিত চৌধুরী, কমল চক্রবর্তী, পরিতোষ ভট্টাচার্য, দীপঙ্কর চন্দ, সঞ্জীব রায়, মানস দাস, অরিন্দম দেব, মধুসূদন কর, খাদেজা বেগম লস্কর প্রমুখ স্মারকপত্র প্রদান কালে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীকে বলেন, বর্তমানে কাছাড় জেলার তাপমাত্রা ৩৮/৩৯ ডিগ্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তা প্রায় ৪৯/৫০ ডিগ্রি অনুভূত হচ্ছে। এই তীব্র গরমে যখন প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের তখনই বিদ্যুৎ সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। ফলে সাধারণ জনগণ বিশেষ করে বৃদ্ধ, অসুস্থ ও শিশুরা মারাত্মক কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছেন।
বর্তমানে যেহেতু প্রিপেড ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ বিল অগ্রিম সংগ্রহ করা হচ্ছে তাই নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে অসুবিধা কোথায়? তাঁরা প্রশ্ন তোলেন ‘ল ভল্টেজ’ সমস্যার সমাধান এখনও হয়নি কেন? তারা বলেন, বেশিরভাগ ট্রান্সফরমারই ক্ষমতার চেয়ে বেশি লোড বহন করছে ফলে অতিরিক্ত লোড বহনের জন্য সেগুলোতে যান্ত্রিক গলযোগ দেখা দিচ্ছে এবং বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে।
সংগঠনের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব রায় অভিযোগের সুরে বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গতকাল বলেছেন এপিডিসিএল ও এপিজিসিএল দেশের মধ্যে পরিষেবা প্রদানকারী সরকারি সংস্থা হিসেবে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী এও বলেছেন যে এপিডিসিএল লোকসানে পরিবর্তে লাভের মুখ দেখছে তাই এতে তিনি গর্বিত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এপিডিসিএল যদি ঘন্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করে সেরা পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হয়ে যায় তাহলে দেশের বাকি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির অবস্থা কী? তিনি আসামের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।
দীপঙ্কর চন্দ বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা কতটুকু বাস্তবসম্মত তা জনগণ বুঝতে পারছেন। তিনি বলেন মুখ্যমন্ত্রীর আসল উদ্দেশ্য জনগণকে নিংড়ে টাকা উপার্জন করা। অরিন্দম দেব বলেন স্মার্ট মিটার জোর করে লাগানোর সময় বলা হয়েছিল যে বিদ্যুৎ সমস্যা পুরোপুরি মিটে যাবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক উল্টো, এখন এপিডিসিএল অগ্রিম টাকা নিচ্ছে কিন্তু পরীষেবা দিতে ব্যর্থ। মধুসূদন কর, রঞ্জিত চৌধুরী, মানস দাস, কমল চক্রবর্তী বলেন এপিডিসিএল বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। শুধু তাই নয়, জরাজীর্ণ বৈদ্যুতিক তার, ট্রান্সফরমার ইত্যাদির জন্য দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বহু লোকের জীবনহানী ঘটছে অথচ তারা নির্বিকার। অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন এর আসাম রাজ্য শাখার অন্যতম আহ্বায়ক হিল্লোল ভট্টাচার্য স্মারকলিপি প্রদান কালে বলেন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণ করতেই প্রিপেড স্মার্ট মিটার চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল এর সাথে উন্নত পরিষেবা প্রদানের কোনো সম্পর্ক ছিল না যা আজ প্রমাণিত। তিনি বলেন গ্রাহকদের জোর করে স্মার্ট মিটার চাপিয়ে দেওয়ার অধিকার কোনো আইনে নেই।
স্মারকপত্র গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী অবিলম্বে একটি সভা আয়োজন করবেন বলে আশ্বাস দেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মিত, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা, ‘ল ভোল্টেজ’ সমস্যার স্থায়ী সমস্যার সমাধানে “ওভার লোডেড “ট্রান্সফরমারের জায়গায় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রান্সফরমার বসানো এবং এলটি লাইনে লোডের ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জরাজীর্ণ বৈদ্যুতিক তার, বিকল ট্রান্সফরমার ইত্যাদি দ্রুত সরিয়ে নতুন বৈদ্যুতিক তার, ট্রান্সফরমার ইত্যাদি বসানোর দাবি জানানো হয়।