শান্তি সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ধর্মীয় উৎসবকে হাতিয়ার
বরাক তরঙ্গ, ৩ জুলাই, সোমবার,
দেশের শান্তি সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ধর্মীয় উৎসবকে হাতিয়ার করছে দুষ্কৃতীরা। গত কয়েকবছর ধরে যেকোন ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সম্প্রতি নষ্ট করার প্রয়াস চালালেও দেশের নাগরিক তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হতে দেননি। এতে তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও প্রয়াস থেকে দূরে সরছে না দুষ্কৃতীরা। মহরম, রামনবমী সহ ধর্মীয় উৎসব পালনের অঙ্গ হিসেবে বের হওয়া র্যালিকে হাতিয়ার করে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, কর্ণাটক, বিহার ইত্যাদি রাজ্যে গত দুই বছরে এসব র্যালিকে হাতিয়ার করে দাঙ্গা বাধাতে চেয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ তাতে কোন আমল দেয়নি। ফলে নির্দিষ্ট ওই এলাকার বাইরে ছড়ায়নি উত্তেজনা।
একইভাবে বরাক উপত্যকাও বারবার চেষ্টা করা হচ্ছে। হাইলাকান্দি জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করা হয় বেশ কয়েকবার। তাতেও লাভ হয়নি। ঈদের দিনে শিলচরে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় বিস্তার লাভ করতে পারেনি। তবে বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা সংঘটিত করে এর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হয়। এরপরও মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। কেন না মানুষ বুঝে গেছে এই ফাঁদে পা দিলে ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ নেই। আর লাভবান হয় বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলো। আর এও বুঝে গেছেন যে দাঙ্গায় সামিল হওয়া মানে শুধু নিজের নয় গোটা সমাজের ক্ষতি হয়। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ। আরও একটি বিষয় হল মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতিদিন জীবন যুদ্ধ করতে হচ্ছে। জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দাম সাধারণ মানুষ তার সামান্য প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দিনের আয়ে কোন ভাবেই পরিবারের ভরণপোষণ করা মোটেই সম্ভব হচ্ছে না। ওষুধপত্র, সন্তানের পড়াশোনা খরচ জোগাড় করতে ঘুম থেকে উঠে টাকার পেছনে দৌঁড়াতে হচ্ছে। আর এই সংখ্যা মোটেই কম নয়। শতকরা ৭০ শতাংশ হবে। বৃহৎ সংখ্যা যখন বাঁচবার লড়াই করছে প্রতিনিয়ত সেসময়ই মাঝে মধ্যে উস্কানিমূলক বা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত এনে তাদের লড়াই বা ক্ষোভ যাতে অন্য মোড় না নেয় এই প্রচেষ্টাও চলে।