ফের গ্রেফতার রাইজর দলের নেতা জহির

এ বি লস্কর, লালা।
বরাক তরঙ্গ, ১৯ এপ্রিল : রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে নির্বাচনের প্রাক্কালে গ্রেফতার হলেন রাইজর দলের নেতা জহির উদ্দিন লস্কর! সংগে আর ও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জামিন অযোগ্য মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। রাইজর দলের সভাপতি তথা শিবসাগরের বিধায়ক অখিল গগৈর হাইলাকান্দি সফরের প্রাক্কালে রাইজর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা জহির উদ্দিন লস্করকে গ্রেফতার করায় জেলাজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

অখিল গগৈর সাহাবাদের সভা বানচাল করতে ইউডিএফের ষড়যন্ত্র, ভয় দেখিয়ে কাজ হবে না : জহির _____

শুক্রবার বিকেলে তাঁকে হাইলাকান্দির জেলা আয়ুক্ত অফিসের সামনে থেকে গ্রেফতার করে সদর থানায় আটক করে রাখা হয়। তাঁর সঙ্গে অন্য পাঁচ জনকেও একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে।সবাইকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। দল ও সংগঠনের সদস্যরা চেষ্টা করেও তাঁকে ছাড়িয়ে আনতে পারেননি। অখিল গগৈর হাইলাকান্দি সফরের প্রাক্কালে জহির উদ্দিনকে পুলিশ আটক করায় জেলা রাইজর দল এবং কৃষক মুক্তির সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।

হাজতে প্রেরণ করার আগে জহির উদ্দিনের অভিযোগ করে বলেন, শনিবারের সাহাবাদের নির্বাচনী জনসভাকে বানচাল করতে সোনাইর বিধায়ক করিম উদ্দিন বড়ভূইয়ার ভুয়ো জামিন অযোগ্য মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জহির উদ্দিনের আরও অভিযোগ থানায় বসে বই দেখে জামিন অযোগ্য ধারা প্রয়োগ করে মামলা লেখা হয়েছে। তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন,যতই ষড়যন্ত্র করা হোক না কেন শনিবারের জনসভা একশো শতাংশ সফল হবেই। ইউডিএফের এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবেই। হাইলাকান্দি জেলায় ইউডিএফ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। বলেন, এক জহিরকে জেলে পুরা হলেও হাজার হাজার জহির রয়ে গেছেন। তারাই শনিবারের হাফিজ রশিদ চৌধুরী নির্বাচনী জনসভা সফল করে তুলবেন। হাজার হাজার মানুষের সমাগম হবে। সংবাদ মাধ্যমে বলেন, এক মাস নয়,তিন মাস জেলে থাকলেও ভোটে কিন্তু তার কিচ্ছু আসবে যাবে না। মানুষ এবার স্থির করে নিয়েছেন হাফিজ রসিদ আহমদকে ভোটে জেতাবেন। ভোটের যন্ত্রে তার পরিচয় পাওয়া যাবে।
  
শনিবার বিকাল তিনটায় কাটলিছড়া বিধানসভা আসনের সাহাবাদ বাজারে বিরোধী ঐক্যমঞ্চের সমর্থিত প্রার্থী হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরীর সমর্থনে এক বিশাল নির্বাচনী জনসভার হচ্ছে। সভায় উপস্থিত থাকবেন প্রাক্তন মন্ত্রী রকিবুল হুসেন কংগ্রেসের  কার্যকরি সভাপতি জাকির হোসেন শিকদার, রাজ্য সভার সাংসদ বিশিষ্ট সাংবাদিক অজিতকুমার ভূঁইয়া।

কৃষ্ণপুর থেকে বিশাল মিছিল করে নির্বাচনী প্রচার মঞ্চে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে। চলছে তার জোরদার প্রস্তুতিও। তারই প্রাক্কালে জহির উদ্দিন লস্করকে আচমকা গ্রেফতার করায় দলীয় ও সংগঠনের কর্মী মহলে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী কালকের নির্বাচনী জনসভা তাদের কাছে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। অখিল গগৈর কাছেও জহির উদ্দিনের গ্রেফতারের খবর পৌঁছে গেছে। তিনি সতীর্থদের ধৈর্য ধরে নির্বাচনী প্রচার কাজের প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
 

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ‘কা’ আইন বলবৎ হওয়ার প্রতিবাদে রাইজর দল সহ বিরোধী দলগুলির প্রতিবাদ আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠার সময়ও পুলিশ জহির উদ্দিনকে আটক করেছিল। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে জহিরকে তাঁর বাড়ি থেকে লালা পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে এসেছিল। অবশ্য ওই দিন বিকেল তিনটে নাগাদ তাঁকে ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এদিকে জহিরের মুক্তির দাবিতে রাইজর দল, ছাত্রমুক্তি সংগ্রাম সমিতি , কৃষকমুক্তি সংগ্রাম সমিতি কর্মীরা প্রতিবাদ কার্যসূচী পালন করে জহিরকে অভিলম্বে মুক্তির দাবি তুলে।

Author

Spread the News