তীব্র লোডশেডিঙে অতিষ্ঠ মানুষ

বরাক তরঙ্গ, ৩ সেপ্টেম্বর, সোমবার :
বিদ্যুৎ সমস্যায় নাজেহাল বরাক উপত্যকা সহ গোটা রাজ্যের মানুষ। মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিঙের ফলে বরাক উপত্যকার জনগণের কার্যত নাভিশ্বাস উঠছে। শরৎকাল প্রবেশ করেছে প্রকৃতিতে, কিন্তু এখনও খাল বিল নদী জলে পরিপূর্ণ। পরিবেশে চলছে অস্বাভাবিকতা। একদিকে কাঠফাটা রোদ্র, এরমধ্যে বিদ্যুতের লুকোচুরিতে মানুষের পরিস্থিতি বেহাল। বর্তমান লোডশেডিঙের জন্য গ্রাহকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঁকি মারছে। কেননা আগের সরকার থাকাকালীন রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি কোম্পানি বিএসএনএলে এভাবে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন সমস্যা, এরপর গ্রাহকরা ওই কোম্পানি ত্যাগ করে বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানির গ্রাহক হতে শুরু করেন। এতে বিএসএনএলের গ্রাহকের সংখ্যা ক্রমশ কমেছে। একইভাবে অসমে একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন কোম্পানি এপিজিসিএল-কে ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি করার পরিকল্পনায় এমনটা হতে পারে, এমন প্রশ্ন সচেতন মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে।

তীব্র লোডশেডিঙে শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ইত্যাদি প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষকে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। ন্যাশনাল গ্রিডে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় এপিডিসিএল চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বলে যে বক্তব্য প্রকাশ করেছিল তা আদৌ কী সত্য। কারণ যদি দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সত্যি ঘাটতি হতো তাহলে অন্যান্য রাজ্যও এই সমস্যায় ভুগতে হত। রাজ্য সরকার নিজেদের চাহিদা মেটানোর মতো নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকাঠামো গড়ে তুলেনি। তাই খোলা বাজার অর্থাৎ ন্যাশনাল গ্রিডের অন্তর্গত ব্যক্তিগত মালিকানাধীন উৎপাদন কোম্পানিগুলো থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করছে এপিডিসিএল। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন উৎপাদন কোম্পানিগুলো প্রতি ইউনিট ১৪ টাকা দরে বিদ্যুৎ বিক্রি করছে। ফলে ৭ টাকা প্রতি ইউনিট হিসেবে বিক্রি করতে গিয়ে যে ঘাটতি হচ্ছে তা লোডশেডিং করে পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অথচ প্রিপেড ব্যবস্থা চালু করে গ্ৰাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা আদায় করা হচ্ছে, সেই টাকা তাহলে যাচ্ছে কোথায়? সব মিলিয়ে উন্নয়নের জোয়ার চলছে বলে দাবি করা রাজ্য সরকারের মুখোশ খসে ফেলেছে লোডশেডিং সমস্যা। শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান করতে না পারলে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার খেসারত দিতে হবে সরকারকেই।

Author

Spread the News