পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে আটক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র
বরাক তরঙ্গ, ২৫ এপ্রিল : জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে আটক হয়েছে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের এক ছাত্র। একে বাহার উদ্দিন চৌধুরী নামের স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রটি সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছিল এবং তার বিরুদ্ধে মামলা করে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের ছাত্ররা। বুধবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ তাকে আটক করে পুলিশ এবং বিষয়টি তদন্তের আওতায় রয়েছে।
পুলিশ সুপার নুমাল মাহাতো জানিয়েছেন, তারা অভিযোগ পাওয়ার পর ছাত্রটিকে আটক করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ রয়েছে সেগুলো যাচাই করে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর অনুযায়ী, আপাতত ছাত্রটিকে আটক করা হয়েছে, তবে বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে।

বাহার উদ্দিন চৌধুরীর বাড়ি কাছাড় জেলার কাটিগড়া এলাকায় এবং সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন আইরংমারায় একটি হোস্টেলে থাকতো। সে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছিল, “ওই শুয়োরের বাচ্চাগুলো কোথায় পেল যে আতঙ্কবাদীরা নাম জিজ্ঞেস করে করে মেরেছে! পেন্ট খুলে গোপনাঙ্গ দেখে দেখে মেরেছে! কাল থেকে দেখলাম কিছু উগ্র মৌলবাদী যুবক যুবতী, এমনকী সাংবাদিকরা ও শেয়ার করছেন, এমন পোস্ট। আসলে এদের শুধু বাহানা চাই। কোনো কিছু একটা হলে তারা তাদের সাম্প্রদায়িক, সন্ত্রাসী মনের ভাব অন্তর্জালে বমি করে ছড়িয়ে দেয়! আসল সন্ত্রাসবাদী এরা। এরা কোথায় থাকে যখন প্রকাশ্যে ভিডিওতে দেখা যায় ‘জয় শ্রীরাম’ না বলার কারণে মুসলিমদের হত্যা করা হয়! গরু খাওয়ার অপরাধে নিরীহ মানুষদের হত্যা করা হয়! মুসলিম হওয়ার অপরাধে আখলাকের মতো শ্রমিকদের জীবিত পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ফিলিস্তিনের নিরীহ নারী, পুরুষ, বাচ্চাদের হত্যা করে ইহুদীরা। আমার পোস্ট কারো গায়ে লাগলে, কিছু করার নেই। আমি যেমন ফিলিস্তিনের ঘটনার প্রতিবাদ করেছি, ‘জয় শ্রীরাম’ না বলার কারণে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদ করেছি, আজ ও এই সন্ত্রাসী আক্রমণের প্রতিবাদ করছি। সিলেকটিভ প্রতিবাদকারীরাই আসল সন্ত্রাসী! এদের চেনে রাখা দরকার। যারা আক্রমণের শিকার, তারা বলছে মানুষই দেখেনি, শুধু গুলির আওয়াজ শুনেছে, গুলি লেগেছে, এখানে আইডেন্টিটি দেখে দেখে মরার কথা কেমনে প্রসব হয়?”

অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের তরফে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, বাহার উদ্দিন চৌধুরী ইচ্ছাকৃতভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকেদের মনে আঘাত দিয়েছে এবং এটি মানহানির পর্যায়ে পড়ে। তারা বলেন, ‘পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে ছাত্রটি অত্যন্ত কুরুচিকর মন্তব্য করেছে। হিন্দুদের শুয়োরের বাচ্চা সহ আরও কিছু আপত্তিকর শব্দের মাধ্যমে সম্বোধন করেছে। এছাড়া সে সমাজে ধর্মীয় সৌহার্দ্যমূলক ভাবনার ওপর আঘাত করেছে। এটি ভারতীয় ন্যায় সংহীতার ৩৫৬ ধারার অধীনে অপরাধ এবং আমরা পুলিশের কাছে আবেদন করছি তারা যেন ছাত্রটিকে গ্রেফতার করেন।’ বিদ্যার্থী পরিষদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে পুলিশ একটি মামলা গ্রহণ করেছে এবং এর পরেই অভিযুক্ত ছাত্রটিকে আটক করা হয়েছে।