জিরিবামে গোষ্ঠী সংঘর্ষ : উপজাতি যুবককে পাকড়াও এনআইএ-র
কেএইচ লস্কর, লক্ষীপুর।
বরাক তরঙ্গ, ৩১ জুলাই : গত বছর জিরিবামে গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িত এক উপজাতি যুবককে পাকড়াও করেছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। এনআইএর কাছে নথিভুক্ত মামলা নম্বর ১৫/২০২৪। ধৃত যুবকের নাম থাংলিনলাল মার, বয়স ৪০ বছর, বাড়ি লক্ষীপুরের দিলখুশ জিপির ময়নাতল পুঞ্জিতে। পেশায় সে ইঞ্জিন চালিত নৌকার মাঝি। এনআইএ দলের নির্দেশ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ফুলেরতল ফেরিঘাট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মণিপুর রাজ্যের জিরিবাম জেলার জাতিদাঙ্গা, অপহরণ, খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনআইএ দলের কাছে তার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ রয়েছে। এনআইএ-র তরফ থেকে নির্দিষ্ট খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা নাগাদ লক্ষীপুর কো-ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডিশনাল এসপি পৃথ্বিরাজ রাজখোয়া ফুলেরতল ফেরিঘাটে হানা দিয়ে গ্রেফতার করেন মাঝি থাংলিনলাল মারকে। থাংলিনলাল-য়ের মোটর লঞ্চ ফেরিঘাটে ভিড়তেই তাকে পাকড়াও করে লক্ষীপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন এনআইএ-র তদন্তকারী দলও লক্ষীপুর থানায় অবস্থান করছিল। প্রায় দু’ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর এনআইএ তদন্তকারী দল তাকে জিরিবামে নিয়ে। তার বিরুদ্ধে অপহরণ ও খুনের অভিযোগ রয়েছে এনআইএ দলের কাছে।
এদিকে, লক্ষীপুর থানায় উপস্থিত ধৃত থাংলিনলাল মারের বোন এবং আত্মীয়রা সংবাদ মাধ্যমে জানান থাংলিনলাল মুলত একজন মাঝি। এই পেশা দিয়ে তার পরিবার চলে। তার স্ত্রী সহ আটটি ছোট ছোট সন্তান রয়েছে। একমাত্র উপার্জনকারী থাংলিনলাল। তারা বলেন, তিনি কোন অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। প্রাণ ভয়ে তিনি জাতিদাঙ্গার সময় অপরাধীদের সহায়তা করেছে মাত্র। সাহায্য না করলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলা হতো। ছয়জন অপহরণকারী দল জোর করে তার মোটর লঞ্চ নিয়ে গিয়েছিল। প্রাণভয়ে সে অপহরণকারীদের পারাপার করতে বাধ্য হয়। তাদের পারাপার না করলে তাকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই মামলায় প্রায় দুইমাস পুর্বে মণিপুরের জাকুরাডর থানায় তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এই বিষয়ে জেরা করার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এবং প্রয়োজন হলে আবার ডাকা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাকে আর ডাকা হয়নি। আজ হঠাৎ ময়নাথল থেকে মোটর লঞ্চে যাত্রী নিয়ে ফুলেরতল ফেরিঘাটে আসতেই তাকে গ্রেফতার করে লক্ষীপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। নিকটাত্মীয়রা বলেন তার বড় ছেলে ফুলেরতলে হোস্টেলে থেকে পড়াশুনা করছে। ফুলেরতল ফেরিঘাটে যাত্রীদের ছেড়ে তার ছেলের হোস্টেল খরচ বাবত টাকা দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আসলে অপরাধী নয়। অত্যন্ত নীরিহ এই যুবক নির্দোষ বলে দাবি করেন তার নিকটাত্মীয়রা।