শিলচরে মৈরাঙ দিবস পালন নেতাজি চর্চা সমিতির

বরাক তরঙ্গ, ১৪ এপ্রিল : আজ ঐতিহাসিক মৈরাঙ দিবস উপলক্ষ্যে শিলচরের সরকারি পেনসনার্স অ্যাসোসিয়েশন ভবনে এক সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নেতাজি সুভাষ ফাউন্ডেশন এর সভাপতি নিহার রঞ্জন পাল। অনুষ্ঠানের শুরুতে আজাদ হিন্দ বাহিনীর অন্যতম সঙ্গীত ‘কদম কদম বাড়ায়ে যা’ গানটি পরিবেশন করেন গৌতম নন্দী। সংগঠনের সম্পাদক সুব্রত চন্দ্র নাথ সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে  বলেন ভারতের স্বাধীনতা লাভের ইতিহাসে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ বাহিনীর ঐতিহাসিক ইম্ফল-কোহিমা যুদ্ধের অন্যতম গৌরবজ্জ্বল দিন ১৯৪৪ সালের ১৪ এপ্রিল কর্নেল সৈকত মালিকের মণিপুরের মৈরাঙে পতাকা উত্তোলনের তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে গতবছর মৈরাঙ দিবসে শিলচর- মৈরাঙ বাইকরেলীতে আয়োজন করা হয়েছিল ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবর্ষ উদযাপন সমিতি, কাছাড়’ এর পক্ষ থেকে। এবছর উক্ত কমিটির সদস্যদের নিয়ে গঠিত ‘নেতাজি চর্চা সমিতি, কাছাড়’ এর উদ্যোগে মৈরাঙ দিবস শিলচরে পালন করার উদ্দেশ্যে ছিল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের আপসহীন ধারার সংগ্রামের ইতিহাসকে সঠিক ভাবে তুলে ধরা।

প্রধান বক্তা নিহার রঞ্জন পাল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ বাহিনীর ঐতিহাসিক ইম্ফল-কোহিমা যুদ্ধের বর্ণনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী সৈনিকদের অসীম ত্যাগ ও বীরত্ব ভারতীয়দের বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। বিশেষকরে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সৈনিকদের দিল্লির লালকেল্লাতে বিচার চলাকালীন সময়ে দেশের সর্বত্র বৃটিশ সরকারের বিরুদ্ধে গণবিদ্রোহ, নৌবিদ্রোহ সংগঠিত হতে থাকে। বিদ্রোহে দেশের অগনিত সৈনিক, সাধারণ মানুষ যেভাবে সামিল হতে থাকে তাতে বৃটিশ সরকার বুঝতে পেরেছিল আর দমনমূলক ব্যবস্থায় বিদ্রোহের আগুন নেভানো যাব না। তাই বৃটিশ সরকার  বাধ্য হয় ভারতের জনগণের স্বাধীনতার দাবী মেনে নিতে। তিনি বলেন কারোর দয়ায় দেশ স্বাধীন হয়নি, হয়েছিল জনগণের অসীম আত্মত্যাগ ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর সঠিক নেতৃত্বে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে বর্তমানে নেতাজীর ইতিহাস ও চরিত্রকে বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। তা দেশের জনসাধারণকেই রুখতে হবে।

শিলচরে মৈরাঙ দিবস পালন নেতাজি চর্চা সমিতির

সভার শেষে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর  নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবর্ষ উদযাপন সমিতি, কাছাড় এর উদ্যোগে আয়োজিত জেলা ভিত্তিক বাইকরেলীতে অংশগ্রহণকারীদের শংসাপত্র এবং মেমেন্টো প্রদান করা হয় এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর উপর বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট কবিদের রচিত ও কবি তমোজিৎ সাহা কর্তৃক সম্পাদিত কবিতার বই ‘সুভাষিত’ এর আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি যথাক্রমে দীপঙ্কর চন্দ, নির্মলকুমার দাস, অধ্যাপক অজয় রায়, ভবতোষ চক্রবর্তী, দুলালী গাঙ্গুলি, দিলীপ নাথ প্রমুখ।

Author

Spread the News