মডেল ডিগ্রি কলেজ নিয়ে চুড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন সুজাম : ডিমান্ড কমিটি
বরাক তরঙ্গ, ২৭ আগস্ট : মডেল ডিগ্রি কলেজ নিয়ে ফের সরগরম হয়ে উঠেছে দক্ষিণ হাইলাকান্দি। সুলতানির বদলে মণিপুরে কলেজের স্থায়ী ভবন নির্মাণের দরপত্র প্রকাশ হতেই কাটলিছড়ার বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্করের ভূমিকায় বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন জনগণ। হাইলাকান্দির বহু প্রত্যাশিত মডেল ডিগ্রি কলেজ নিয়ে কাটলিছড়ার বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন ডিমান্ড কমিটি সহ দক্ষিণ হাইলাকান্দিবাসীর সঙ্গে। এমন গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করে মঙ্গলবার এক সভায় মাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভ ঝাড়লেন মডেল ডিগ্রি কলেজ ডিমান্ড কমিটির কর্মকর্তারা। বিধায়কের এই বিশ্বাসঘাতকতায় দক্ষিণ হাইলাকান্দির মানুষ বেশ দুঃখ পেয়েছেন বলে নিজেদের মন্তব্য তুলে ধরেন। ক্ষুব্ধ সদস্যরা বিধায়ক সুজামকে ইতিহাসের খলনায়ক মীরজাফরের সঙ্গে তুলনা করে তাঁকে দ্বিতয় মীরজাফর আখ্যা দেন।
এ দিন কিল্লারবাক সমাজ উন্নয়ন ক্লাবের মডেল ডিগ্রি কলেজ ডিমান্ড কমিটির এক সভায় সভাপতি সালেহ আহমদ মজুমদার ক্ষোভ ব্যক্ত করে বলেন, মডেল ডিগ্রি কলেজ সুলতানিছড়ায় না মণিপুরে স্থাপন হবে এনিয়ে বিধায়ক এবং ডিমান্ড কমিটির মধ্যে দীর্ঘ দুই বছর রশি টানাটানির পর যখন গত লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সুলতানিছড়ায় স্থাপনের পক্ষে সায় দিয়েছিলেন তখন বিধায়ক সুজাম সুলতানিছড়ার বলদাবলদি তেমাথায় এসে ঘটা করে সভার মাধ্যমে মডেল ডিগ্রি কলেজ সুলতানিছড়ায় স্থাপনের ঘোষণা করে যান। তাঁর এই ঘোষণায় ডিমান্ড কমিটির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে কোনও ষড়যন্ত্র না করে ‘যেমন কথা তেমন কাজ’ করার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি সবাইকে সুলতানিতে হওয়ার কথা জানিয়ে ডিমান্ড কমিটির তৎপরতা বন্ধ করে মূলত যে এই ফাঁকে মণিপুরে টেন্ডারের ফন্দি এঁটেছিলেন সেটা আজ অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত হয়েছে। বিধায়ক বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেন তিনি।
কমিটির কার্যকরী সভাপতি জহির উদ্দিন লস্কর বক্তব্যে বলেন, দক্ষিণ হাইলাকান্দির মানুষের সঙ্গে চূড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতা করলেন কাটলিছড়ার বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর। মডেল ডিগ্রি কলেজ স্থাপনে তিনি প্রথমে মণিপুরের পক্ষে থাকলেও পরে ডিমান্ড কমিটির তৎপরতায় যখন মডেল ডিগ্রি কলেজ সুলতানিতে হওয়ার সম্ভবনা প্রবল হয়ে ওঠে, তখন সিদ্ধান্ত বদলে বিধায়ক সুজাম সুলতানিতে বিশাল সভা করে সুলতানির পক্ষে চলে যান। কিন্তু এর পেছনে যে বিধায়ক বিশ্বাসঘাতকতা করবেন তা কল্পনাও করেননি দক্ষিণ হাইলাকান্দির জনগণ তথা কমিটির কর্মকর্তারা।
কমিটির অন্যতম সদস্য ইকবাল বাহার বড়ভূইয়াও বিধায়কের ভূমিকায় ক্ষোভ ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন। সভায় বিশদ আলোচনার পর “সুলতানিছড়া মডেল কলেজ ছাত্র জনতা আন্দোলন কমিটি”র নামে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ইকবাল বাহার বড়ভূইয়াকে মুখ্য আহ্বায়ক মনোনীত করে এই কমিটিতে দক্ষিণ হাইলাকান্দির বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন জাতি জনগোষ্ঠী থেকে আহ্বায়ক নেওয়া হয়। কমিটির নেতৃত্বে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দক্ষিণ হাইলাকান্দির ছাত্র জনতা সম্মিলিত বৃহত্তর গণ আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।