ভারতের সাধারণ নির্বাচন প্রত্যক্ষ করার জন্য সর্ববৃহৎ বৈশ্বিক প্রতিনিধি

পিএনসি, নয়াদিল্লি।
৬ মে : ভারতের নির্বাচন কমিশনের চিরাচরিত ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে গণতান্ত্রিক দেশগুলির মধ্যে স্বচ্ছতার এক সংস্কৃতিকে লালন করতে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উচ্চমানের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনরাবৃত্ত করতে ২৩-টি দেশের ৭৫ জন প্রতিনিধি দল ভারতের সাধারণ নির্বাচন দেখতে ভারতে এসেছে। ‘আন্তর্জাতিক নির্বাচন পরিদর্শক কর্মসূচি’ তথা আইইভিপি-র অংশ হিসেবে এই প্রতিনিধিরা এসেছেন। রবিবার নয়াদিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এবং সেই সঙ্গে দুই নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার ও  সুখবীর সিং সাঁধুর উপস্থিতিতে নয়াদিল্লিতে এই অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।

এই প্রতিনিধি বর্গের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার  রাজীব কুমার মন্তব্য করেছিলেন যে ভারতীয় নির্বাচনী স্থান এবং ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাজের অবদান বিশ্ব গণতান্ত্রিক স্থানের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ধারণ করে। প্রক্রিয়া এবং ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে যাকে বৈধভাবে বলা যেতে পারে, বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক স্থানের সংকোচন বা পতনের অন্যথায় ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের ক্ষেত্রে ‘গণতান্ত্রিক উদ্বৃত্ত’ একটি বিশাল তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় নির্বাচনের অবকাশ ও স্থান সত্যিই অভুতপূর্ব, এর অভিনবত্ব এই জন্য যে এখানে নির্বাচনী নিবন্ধন যেমন আবশ্যিক নয়, তেমনি ভোট দানেরও বাধ্যতামূলক নয়। সেই জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশন একান্তভাবেই এক উৎসাহ উদ্দীপক বাতাবরণ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে, কমিশন নাগরিকদের নির্বাচক তালিকায় স্বেচ্ছায় আংশ গ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানায় এবং, তারপর, কমিশন ভোটদাতাদের তাদের মতদানের অধিকার প্রয়োগ করতে উৎসাহ দানের জন্য পদ্ধতিগতভাবে ভোটার সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে চেতনা সঞ্চারিত করে। তিনি বলেন, “এটা বলা স্বতঃসিদ্ধ হবে যে আমরা যে প্রক্রিয়াগুলি গ্রহণ করি তার বিশ্বাসযোগ্যতা নির্বাচনে নিছক ভোটদান এবং ভোটার-জনসংখ্যা অনুপাতের পরিপ্রেক্ষিতে ভোটার তালিকার কাছাকাছি সন্ত্যোষ্টির মাধ্যমে যাচাই করা হয়।”

ভারতে নির্বাচনী কর্মকান্ডের পরিধি ও মাত্রা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশজুড়ে ১ মিলিয়নেরও অধিক ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ১৫ মিলিয়নেরও বেশি ভোটগ্রহণকারী আধিকারিক ও কর্মী নিপাট ৯৭০ মিলিয়ন নির্বাচক মন্ডলীকে স্বাগত জানাবেন। শ্রী কুমার আরোও বলেন, পরিদর্শনরত প্রতিনিধিগণ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে এই দেশ ও জাতির বহুমাত্রিক বৈচিত্রের পরিপূর্ণ অভিপ্রকাশ প্রত্যক্ষ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ভারত হল উৎসব মুখরতাময় এক দেশ। এবং সরাসরি গণতন্ত্রের এই উৎসবের অভিজ্ঞতাকে স্বচক্ষে দেখতে ও অর্জন করতে তিনি প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানান।

এই অনুষ্ঠানেরই পাশাপাশি কমিশন কাজাকাস্তান, উচবেকিস্তান, এবং নেপালের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকগণ সহ দেশগুলির প্রতিনিধিবর্গের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মতামত বিনিময় করেন।     

এই অনুষ্ঠানের আগে প্রতিনিধিদের কাছে ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক কমিশনের তরফে তুলে ধরা হয়। প্রতিনিধি দলটি ছয় ভাগে বিভক্ত হয়ে ছয়টি রাজ্য যথা মহারাষ্ট্র, গোয়া, গুজরাট, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া প্রস্তুতি দেখার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। আগামী ৯ মে এই ছয়টি রাজ্যে ভোট গ্রহণ করা হবে।

Author

Spread the News