কাশ্মীরের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল পাথারকান্দি
হিন্দু সংগঠনের প্রতিবাদ সভা ও মশাল মিছিল, ইসলামিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার____
মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ২৪ এপ্রিল : সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ সন্ধ্যায় উত্তাল হয়ে ওঠে পাথারকান্দির তেমাথা অঞ্চল। একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত হয় প্রতিবাদ সভা ও মশাল মিছিল।সন্ধ্যা পাঁচটার পর থেকেই সংঘ পরিবারভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা স্থানীয় টাউন কালীবাড়িতে জমায়েত হতে থাকেন। ভক্তিমূলক ‘ওঁকার’ ধ্বনির মধ্য দিয়ে সভার সূচনা হয়। এরপর পাথারকান্দি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রখন্ড সভাপতি পিক্লু নাথ একটি দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করে জনসমাবেশে উদ্দীপনা জাগা।উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সভাপতি অনিরুদ্ধ নাথ। আলোচনা চলাকালীন কাশ্মীর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রান্ত গো-রক্ষা প্রমুখ পংকজ শ্যাম। তিনি বলেন কাশ্মীরে যা ঘটেছে, তা কেবল বর্বরতা নয়— এটি বিশ্বের সভ্যতার জন্য অশনিসংকেত। ইসলামী জেহাদিরা হিন্দুদের শনাক্ত করতে তাদের প্যান্ট খুলে গোপনাঙ্গ দেখে গুলি করে হত্যা করেছে। এটি সভ্যতার মুখে চরম লজ্জা। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গে তথাকথিত ওয়াকফ আন্দোলনের আড়ালে হিন্দুদের বিতাড়ন, সম্পত্তি লুণ্ঠন, মহিলাদের উপর অত্যাচার ও হত্যার মতো ঘটনা এবং সর্বশেষ কাশ্মীরের ঘটনা—সবই একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। বক্তারা অভিযোগ তোলেন, বরাক উপত্যকাতেও হিন্দু মেয়েরা লাভ জেহাদের শিকার হচ্ছে, ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হচ্ছে। নিভিয়া ও কানাইবাজারে গোহত্যা করে মন্দির ও হিন্দু ঘরে গো-মাংসের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও উঠে আসে আলোচনায়।

সভা থেকে হিন্দু সমাজকে আহ্বান জানানো হয়, ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশে থাকা প্রশাসনের দিকে না তাকিয়ে এবার হিন্দুদের নিজেদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে একত্রিত হয়ে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। দেশকে রক্ষা করতে না পারলে হিন্দুদের আর কোথাও ঠাঁই নেই।সভা শেষে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের ব্যানারে বের হয় একটি বিশাল মশাল মিছিল, যা তেমাথায় পৌঁছালে স্থানীয় প্রশাসন মিছিল আটকে দেয়। এরপর সেখানে এক তাৎক্ষণিক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।সেখানে বজরং দলের বিশ্বজিত বণিক বলেন,ওয়াকফ বিল হোক বা লাভ জেহাদের নামে হিন্দু মেয়েদের উপর অত্যাচার— সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুরা এসব আর বরদাস্ত করবে না। প্রতিরোধ হবেই, এবং ইসলামিক জেহাদের বিরুদ্ধে যেকোনো মূল্যে ব্যবস্থা নিতে হবে।এই সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ রপ্তানির জন্য দায়ী করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সেইসঙ্গে পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনরায় দখলের দাবি তোলে সংগঠনগুলি। সভাস্থলে উঠতে থাকে পাকিস্তান মুর্দাবাদ, ইসলামিক সন্ত্রাসী মুর্দাবাদ, কাশ্মীর চাই, নিরীহ হিন্দু হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ চাই ইত্যাদি স্লোগান। এই প্রতিবাদ সভায় এবং মিছিলে উপস্থিত ছিলেন দীপক নাথ, জয়গণেশ সালিয়া, সুজিত সিনহা, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সম্পাদক সুদীপ পাল, মণিকান্ত সিনহা, মুকেশ তেওয়ারী, নয়ন দাস, ঝন্টু সিনহা, বিপ্লব সোম, সুমিত পাল, ভিকি দাস, সুদীপ শুক্লবৈদ্য, গোপীরানী সিনহা, বিকাশ সিনহা, পম্পি দেবনাথ প্রমুখ।
