ভূপেনের সামনেই দুই গোষ্ঠীর রণক্ষেত্র হাইলাকান্দিতে
বরাক তরঙ্গ, ২২ ফেব্রুয়ারি : হাইলাকান্দিতে রণক্ষেত্রে পরিণত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভূপেন বরার সভা। দলীয় কর্মসূচির মধ্যেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় বচসা, যা মুহূর্তের মধ্যে রূপ নেয় তীব্র সংঘর্ষের। পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, ক্ষুব্ধ হয়ে সভাস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন ভূপেন বরা। যদিও পরে তিনি আবার ফিরে আসেন, কিন্তু এই ঘটনা হাইলাকান্দি কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েনকেই স্পষ্ট করে তুলেছে।
প্রদেশ কংগ্রেসের ‘উঠানে উঠানে’ শীর্ষক কর্মসূচিতে অংশ নিতে আজ হাইলাকান্দির বর্ণীব্রিজ এলাকায় পৌঁছান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভূপেন বরা। স্বভাবতই, দলীয় কর্মী-সমর্থকরা তাঁর আগমনে উচ্ছ্বসিত ছিলেন। কিন্তু সেই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সভা শুরুর পূর্বেই শুরু হয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা। আর ধীরে ধীরে উত্তপ্ত বিতর্কে পরিণত হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে তা হাতাহাতির রূপ নেয়, এবং সভাস্থল বিশৃঙ্খলার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। দীর্ঘদিন ধরে হাইলাকান্দি কংগ্রেসের অভ্যন্তরে চলা সাংগঠনিক মতানৈক্য থেকেই এই বিবাদের সূত্রপাত। কে দলের নেতৃত্বে থাকবে, কার কতটা ক্ষমতা— এসব নিয়ে দলের ভেতরেই দ্বন্দ্ব তীব্র হয়েছে। আজকের ঘটনাটি সেই দ্বন্দ্বেরই প্রকাশ্য রূপ। সভার মাঝেই প্রতিপক্ষ গোষ্ঠী একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে, এবং ক্রমেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। ভূপেন বড়া এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান, যা উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আরও বিভ্রান্তি ও হতাশা তৈরি করে। পরে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে তিনি আবার সভায় ফিরে আসেন। তবে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “এই পরিস্থিতির জন্য মাত্র ৬-৭ জন নেতা দায়ী। সাংগঠনিক দুর্বলতা ও নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ কোন্দলই এই বিশৃঙ্খলার কারণ।”

তিনি আরও দাবি করেন, নির্ধারিত পরিকল্পনার তুলনায় অনেক বেশি লোক সভায় উপস্থিত হওয়ায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এটি শুধুই লোকসমাগমের সমস্যা নয়, বরং দলের অভ্যন্তরীণ বিভক্তির প্রতিফলন। এই ঘটনায় কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের অস্থিতিশীলতা দলকে আরও দুর্বল করে তুলতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।