উত্তাল শিলচর, ইউনুসের প্রতিচ্ছবি ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পদদলিত
বাংলাদেশের হিন্দুদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে প্রত্যেক ভারতবাসীকে : সনাতনী ঐক্য মঞ্চ
দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৩০ নভেম্বর : ইসকনের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করার পর থেকেই হিন্দুদের বিক্ষোভে উত্তাল সমগ্ৰ এই পৃথিবী। এই প্রতিবাদী কার্যসূচির অঙ্গ হিসেবে “সনাতনী ঐক্য মঞ্চ” -এর ডাকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল সহ আরও অন্যান্য হিন্দু সংগঠনের প্রায় তিন হাজার খানেক সব বয়সী পুরুষ ও মহিলারা কর্মকর্তারা দলবদ্ধভাবে গান্ধীবাগ থেকে মিছিল করে শিলচর প্রেমতলা পয়েন্ট অবধি মশাল মিছিল করে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করেন।
এদিন প্রথমে গান্ধী বাগের রাস্তায় বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের ছবি ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে পদদলিত করেন উপস্থিত প্রতিবাদী কর্মকর্তারা ও সেই সঙ্গে চিন্ময় প্রভুর নিঃশর্ত মুক্তি ও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর পুলিশের নির্যাতনের বিরুদ্ধে নানা রকম স্লোগান দিয়ে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তুলে প্রতিবাদীরা, অন্যদিকে কাছাড় পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ছিল,যাতে প্রতিবাদী মিছিলে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।উক্ত মিছিলে সামিল হন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের শিলচর শাখার মহারাজ গুণসিন্ধুজি মহারাজ, শিলচর ভোলা গিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী ভুবনেশ্বরানন্দ গিরি মহারাজ, শিলচর শংকর মঠ ও মিশনের কর্মাধ্যক্ষ বিজ্ঞানানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ, বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী, প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপকুমার পাল, প্রাক্তন পুর কমিশনার অভ্রজিৎ চক্রবর্তী (ঝলক), বজরং দলের কাছাড় জেলার সভাপতি মিঠুন নাথ, সৌমিত্র দত্ত রায়, শান্তনু রায়,মিত্রা রায়, পল্লবিতা শর্মা সহ অন্যান্যরা।
শিলচর শঙ্করমঠ ও মিশনের কর্মাধ্যক্ষ বিজ্ঞানানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ বলেন,সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ৮ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে সেখানে যে বর্বর নৃসিংহ হত্যাযজ্ঞ, চলছে তা কখনো মেনে নিতে পারবেন না তাই সে দেশের ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদিজিকে আহবান জানান। অবিলম্বে সে দেশের সমস্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হোক এবং ভারতের সকল সনাতনী ভাইদের সে দেশের পণ্য বর্জন করার জন্য আহ্বান জানান। এবং অবিলম্বে সমন্বয় মঞ্চের আহ্বায়ক শ্রী চিন্ময় চৈতন্য ব্রহ্মচারীকে অবিলম্বে জেল থেকে মুক্ত করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা পরিহার করা জন্য আহ্বান জানান এবং এই দেশে লাভজেহাদ, ড্রাগ জিহাদ, ল্যান্ডজিহাদ, থেকে সকলকে সতর্ক থাকার জন্য আহবান জানিয়েছেন। শিলচর ভোলাগিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী ভুবনেশ্বরানন্দ গিরি মহারাজ বলেন, এই দেশে অনেক মুসলিম আছে এদেশে তারা সংখ্যালঘু, তারা এই দেশে তারা নিজেদের ধর্ম নির্বিশেষে পালন করছে, তারা এই দেশে যেভাবে নিরাপত্তার সহিত তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করেন, ওই দেশে সংখ্যালঘুরা কেন পারেন না, তার জবাব ইউনুস সাহেব কে দিতে হবে। ইউনুস সাহেবকে সতর্ক করে দিতে চায় মনে রাখবেন এই দেশে ২০ কোটি মুসলিম আছে। তারা অনেক নিরাপদে আছে। আমরা চাই ওই দেশে প্রায় তিন কোটি হিন্দু আজ তাদের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই কেন? বারবার সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, হত্যা , ধর্ষন,মন্দির ভাঙ্গন, কেন হয়, সে ব্যাপারে আপনি নীরব কেন। আপনাকে জবাবদিহিতা করতে হবে তা না হলে ভবিষ্যতে আপনাকে জনগণ কখনো ক্ষমা করবে না।
বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী বলেন, মনে রাখবেন য়খন ১৯৭১এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হয় তখন ওই দেশের হাজার, হাজার, হিন্দু যুদ্ধ করে সহিত হয়, অনেক হিন্দু মা ও বোনদের ইজ্জত লাঞ্ছিত হয়েছিল ।৩০ লক্ষ্য লোক শহিদ হয় ভারতের সহযোগিতায় এবং প্রায়২০০০ হাজারের ও বেশি সৈনিকের ওই যুদ্ধে আত্ম বলিদান দিয়ে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্র পেয়েছিল।এই বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল হিন্দু জাতিদের হত্যা সহ হিন্দুদের পৌরনিক ও পবিত্র মঠ-মন্দির-আখড়া গুলোকে ধ্বংস করার জন্য। কিন্তু বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষার জন্য যেভাবে প্রভাব সৃষ্টি করছেন,তা বিগত দিনে কোনো সরকার করেন নাই।ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের শিলচর শাখার গুনসিন্ধু মহারাজ বলেন, হিন্দু বল, বীর্য,শিক্ষা সবকিছুতে পরিপূর্ণ এক জাতি কিন্তু হিন্দু দের ঐক্যবদ্ধতার অভাবে বর্তমানে তাদেরকে দুঃখ পোয়াতে হচ্ছে। বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল হিন্দুদের উপর অমানবিক নির্যাতনের ও হত্যার জন্য সৃষ্টি করেছেন ইসলামিক মৌলবাদীরা। আগামী দিনে বাংলাদেশে এই হিন্দুদের উপর অত্যাচার চালায়, তাহলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতকে যুদ্ধ ঘোষণার প্রয়োজন রয়েছে।
এদিন অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন বিধায়ক দীলিপ কুমার পাল, অভ্রজিৎ চক্রবর্তী (ঝলক), মিঠুন নাথ প্রমুখ। এদিন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মনি ভূষণ চৌধুরী, রঞ্জিত কানু, সঞ্জীব সিনহা, সৌমিত্র দাস, অরূপ নাথ, সুকান্ত রায় সহ অন্যান্যরা।