ইউরোর উদ্বোধনী ম্যাচে জার্মানির বিশাল জয়

১৫ জুন : ইউরোর উদ্বোধনী ম্যাচে জার্মানির আধিক্য। ঘরের মাঠে গোলা বারুদে ঠাসা ফুটবল। শুক্রবার রাতে আলিয়াঞ্জ এরিনায় স্কটল্যান্ডকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিল জার্মানি। প্রথমার্ধেই শেষ ম্যাচ। বাকিটা নিয়মরক্ষার। শেষ কবে জার্মানিকে এইভাবে জ্বলে উঠতে দেখা গিয়েছে মনে করা দুস্কর। শেষ তিনটে বড় টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার পর একশো গজে ফিরল জার্মান মেশিনারি। প্রথম মিনিট থেকেই হাই-প্রেসিং ফুটবল। যার মূলে টনি ক্রুস। সঙ্গে দুই তরুণ ফ্লোরিয়ান উইর্টজ এবং জামাল মুসিয়ালা। অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের মিশেলে একেবারে পারফেক্ট স্টার্ট জার্মানির। প্রথমার্ধ ঘটনাবহুল। তিনটে গোল। তারমধ্যে একটি পেনাল্টি। একটি লালকার্ড। প্রথম ৪৫ মিনিটে দু’বার ‘ভার’এর শরণাপন্ন রেফারি। প্রথম দুটো গোল ১৯ মিনিটের মধ্যে। একটি পেনাল্টির আবেদন বাতিল না হলে গোল সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। এক কথায় উদ্বোধনী মঞ্চেই হুঙ্কার জার্মানদের।

জার্মানির ধ্বংসলীলার শুরুটা ম্যাচের ১০ মিনিটে। ক্রুসের থেকে বল পান কিমিচ‌। বক্সের মাথায় উইর্টজকে লক্ষ্য করে স্কোয়ার পাস বাড়ান। চলন্ত বলেই শট জার্মান স্ট্রাইকারের। বল স্কটল্যান্ডের গোলকিপার গানের হাতে লেগে পোস্ট ছুঁয়ে গোলে ঢুকে যায়। রেকর্ড বুকে নাম তুলে ফেলেন উইর্টজ। ইউরো কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার নজির গড়লেন। তার ৯ মিনিটের মধ্যে আবার গোল। ম্যাচের ১৯ মিনিটে ২-০ করেন মুসিয়ালা‌। হ্যাভার্টজকে লক্ষ্য করে থ্রু বাড়ান গুন্ডোগান। তাঁর থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের শটে টপ নেট ফিনিশ। আরও একটি রেকর্ড। ইউরোর ইতিহাসে প্রথমবার একটি দলের জার্সিতে এক ম্যাচে ২১ বছর বা আরও কম বয়সের দুই ফুটবলার গোল করল। ম্যাচের ২৫ মিনিটে মুসিয়ালাকে ফাউল করেন ক্রিস্টি। পেনাল্টি দেন রেফারি। স্কটল্যান্ডের ফুটবলাররা প্রতিবাদ জানানোয় ‘ভার’ এর সাহায্য নেন রেফারি। দেখা যায়, বক্সের বাইরে তাঁকে ফাউল করা হয়েছে। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বদলে ফ্রিকিক দেন। সেই যাত্রায় বেঁচে যায় স্কটল্যান্ড। কিন্তু শেষমেষ জার্মানদের গতিশীল এবং ফ্রি ফ্লোয়িং ফুটবলের কাছে আত্মসমর্পণ স্কটিশদের। ৩২ মিনিটে হ্যাভার্টজের থেকে বল পেয়ে জালে রাখেন মুসিয়ালা। কিন্তু তার আগেই হ্যান্ডবলের জন্য বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। ম্যাচের ৪২ মিনিটে আবার গোলের সুযোগ পেয়েছিল জার্মানি। কিন্তু তেকাঠিতে রাখতে পারেনি ক্রুস। তবে ব্যবধান বাড়াতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। তার এক মিনিটের মধ্যে গুন্ডোগানকে বক্সের মধ্যে বিপজ্জনক ফাউল করেন পোর্টিয়াস। ‘ভার’এর সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। সরাসরি লালকার্ড দেখানো হয় পোর্টিয়াসকে। বিরতির ঠিক আগেই স্কটল্যান্ড দশজনে হয়ে যায়। ৪৫+১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ৩-০ করেন কাই হ্যাভার্টজ। প্রথমার্ধ পুরোপুরি একপেশে। বিরতির পরও তাই। দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোল। দুই তরুণ স্ট্রাইকারকে সামনে রেখে দল সাজিয়েছিলেন জার্মানির কোচ জুলিয়ান নাগেলসম্যান।

বিরতির পরও দাপট অব্যাহত। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে দুই গোলদাতাকে তুলে নেন ৩৬ বছরের কোচ। নামার পাঁচ মিনিটের মধ্যে স্কোরশিটে নাম তোলেন ফুলক্রুগ।‌ ৬৮ মিনিটে ৪-০ তে এগিয়ে যায় জার্মানি। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে মুলারের ক্রস থেকে নিজের এবং দলের গোল ব্যবধান বাড়ান সুপার সাব। কিন্তু অফসাইডের জন্য গোল বাতিল হয়ে যায়। যদিও ম্যাচের অতিরিক্ত সময় (৯০+৩) দলের হয়ে পঞ্চম গোলটি করেন এমরে ক্যান। জার্মানদের দাপুটে ফুটবলে একটিই নেতিবাচক দিক ম্যাচের ৮৭ মিনিটে রুডিগারের আত্মঘাতী গোল। এই একটি মুহূর্ত ছাড়া ফাইভ স্টার পারফরম্যান্স। দৃষ্টিনন্দন ফুটবল উপহার দিল নাগেলসম্যানের দল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কয়েকটা সুযোগ নষ্ট না হলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক মঞ্চে এক ম্যাচে তিন গোল জার্মানির।

Author

Spread the News