হারাং সেতু : ক্লোজ তিন পুলিশকর্মী, আটক দু’টি ওজনসেতুর পাঁচজন
বরাক তরঙ্গ, ১৮ জুন : সিন্ডিকেট চক্রের দৌরাত্ম্যে ভেঙে পড়া ভাঙ্গারপারের হারাং নদীর উপরের সেতুর জন্য ভাঙ্গারপার ফাঁড়ির তিন পুলিশকর্মীকে “ক্লোজ” করা হয়েছে। সঙ্গে আটক করা হয়েছে গাড়িগুলো ওজনের দায়িত্বে থাকা কালাইন এলাকার দু’টি ওজনসেতুর পাঁচজনকে। কালাইন এলাকার দু’টি ওয়েব্রিজ “ভারত ইলেকট্রনিক ওয়েব্রিজ” এর শঙ্কু ভট্টাচার্য এবং গৌতম চন্দ্র পাল সহ “সেন্ট্রাল ওয়েটব্রিজ”-এর তিনজন নিজাম উদ্দিন বড়ভূইয়া, কৃপাসিন্ধু বৈষ্ণব ও আলতাফ হোসেন বড়ভূইয়াকে আটক করা হয়। ক্লোজ করা হয় ভাঙ্গারপাড় ফাঁড়ির এএসআই হোসেন আহমদ লস্কর, হাবিলদার রাজকিশোর সিনহা এবং কনস্টেবল রৌনক বর্মনকে।
এ দিকে, সেতু ভেঙে পড়া নিয়ে পূর্ত (সড়ক) বিভাগের বড়খলা-কাটিগড়া টেরিটোরিয়াল ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার কল্লোল নাথকে জিজ্ঞেস করলে তিনি সরাসরি “ওভার লোড”-গাড়ি পারাপারকেই দায়ী করেন।
সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী যেখানে ৪০ টনের উপরে গাড়ি পারাপারে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা ছিল, সেখানে প্রতিরাতে গাড়ি প্রতি পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ৭০ থেকে ৮০ টন শত শত ওভারলোডেড লরি পার হচ্ছিল এই সেতুর উপর দিয়ে। শেষপর্যন্ত যা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তাই ঘটল— মঙ্গলবার মধ্যরাতে। লাইমস্টোন ওভারলোডেড দু্’টি লরি একসঙ্গে পার হওয়ার সময় ভেঙে পড়ে শিলচর-কালাইন সড়কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংযোগকারী হারাং সেতুটি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিরাতে এই সেতুর উপর দিয়ে শতাধিক লাইমস্টোন, সিমেন্ট ও কয়লা বোঝাই লরি পার হতো, যার জন্য সিন্ডিকেট সদস্যদের হাতে গচ্ছিত হত বিশাল অঙ্কের টাকা। একাধিকবার সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে—এই সিন্ডিকেট চক্রের মূল চক্রীরা কারা? কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিল না।