ঘন ঘন লোডশেডিং : গণ স্বাক্ষর অভিযান কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের
বরাক তরঙ্গ, ১ সেপ্টেম্বর : ঘন ঘন লোডশেডিং এ যখন রাজ্যের মানুষ অতিষ্ট ঠিক তখনই অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন’র অসম রাজ্য কমিটি শুক্রবার রাজ্যের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের দাবিতে গণ স্বাক্ষর অভিযানের সূচনা করল। এ উপলক্ষ্যে আজ সংগঠনের কাছাড় জেলা কো -অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষ থেকে শিলচরের পানপট্টি এপিডিসিএল কার্যালয়ের সামনে বেলা সাড়ে এগারোটায় কোর্ডিনেশন কমিটি’র অন্যতম প্রবীণ সদস্য নাগরিক স্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিদাস দত্ত ফিতা কেটে গণস্বাক্ষর অভিযানের উদ্বোধন করেন। সেখানে উপস্থিত সংগঠনের কো-চেয়ারম্যান সাধন পুরকায়স্থ, প্রাক্তন পুরকমিশনার ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব অতনু ভট্টাচার্য, রূপম সাংস্কৃতিক সংস্থার নিখিল পাল, লেখিকা আদিমা মজুমদার, সমাজকর্মী কমল চক্রবর্তী, মধুসূদন কর, ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি’র মানস দাস, অরিন্দম দেব, অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন’র মৃনালকান্তি সোম, এআইইউটিইউসি’র মাধব ঘোষ, চাম্পালাল দাস, দিলীপ নাথ, অঞ্জনকুমার চন্দ, খাদেজা বেগম লস্কর, হানিফ আহমেদ বড়ভূইয়া, ইউনিশ আলি চৌধুরী, ভবতোষ চক্রবর্তী, এআইডিএসও’র জেলা সম্পাদক গৌরচন্দ্র দাস, পল্লব ভট্টাচার্য, হিফজুর রহমান চৌধুরী, সরল চন্দ্র পাল, বিজয়ী সংঘের রঞ্জিত চৌধুরী, ধ্রুব পুরকায়স্থ, গৌরাঙ্গ নাথ, সত্যজিত গুপ্ত সহ কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তি সহ সাধারণ বিদ্যুৎ গ্ৰাহকরা এতে অংশ গ্রহণ করেন।
সংগঠনের অন্যতম প্রবীণ সদস্য প্রাক্তন শিক্ষক সুব্রতচন্দ্র নাথ স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনের উদ্দেশ্য ব্যখ্যা করে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন গোটা রাজ্যে গ্ৰাহকস্বাৰ্থ বিরোধী প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার ব্যবস্থা ও বিদ্যুতের বৰ্দ্ধিত মাশুল প্ৰত্যাহার, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল-২০২২ বাতিল, বিলের কোনো ধারাকে ঘুরপথে গ্রাহকদের উপর চাপিয়ে না দেওয়া এবং বিদ্যুৎ খন্ডের বেসরকারিকরণের ষড়যন্ত্ৰ বন্ধের দাবিতে রাজ্যের পাঁচ লক্ষ বিদ্যুৎ গ্ৰাহকের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রদানের কার্যসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
হরিদাস দত্ত বলেন বিদ্যুৎ বর্তমান মানব সভ্যতার অগ্ৰগতির অতি গুরুত্বপূৰ্ণ উপাদান। অথচ বিদ্যুৎ পরিষেবাকে ক্ৰমান্বয়ে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্ৰীয় সরকার কেন্দ্ৰ-রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ বিভাগের কেন্দ্ৰীকরণ ঘটিয়ে কর্পোরেট গোষ্ঠীর মুনাফা লুটার স্বাৰ্থে বিদ্যুৎ খন্ডের বেসরকারিকরণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাকে লাভজনক পণ্যে রূপান্তরিত করতে চাইছে। তাই প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার, ‘টিওডি’ নীতি ইত্যাদি প্ৰবৰ্তন করা হয়েছে। স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপনের পর গ্ৰাহকদের বিদ্যুৎ বিল তিন চার গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। প্ৰিপেইড ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ ব্যবহারের পূর্বেই গ্ৰাহকদের মাশুল প্রদান করতে হচ্ছে। এছাড়াও প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মচারীকে কর্মহীন করে দিচ্ছে। তিনি বলেন বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারি সংস্থাগুলোকে ক্ৰমাগত দুৰ্বল করে কৰ্পোরেট গোষ্ঠীকে অত্যাধিক সুযোগ দেয়া হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং সমস্যা দিন দিন বাড়ছে এবং বিদ্যুতের প্ৰতি ইউনিটের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও বিদ্যুৎ খন্ডের ব্যক্তিগতকরণ, বেসরকারিকরণ প্ৰক্ৰিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সংসদে বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল-২০২২ উত্থাপিত হয়েছে। এই বিল আইনে পরিণত হলে ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হবে।
এই কাৰ্যসূচীতে সবাইকে অংশ গ্রহণ করতে সংগঠনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়।
শিলচরের পাশাপাশি রাজ্যের গুয়াহাটি, নলবাড়ি, ধুবড়ি, গোয়ালপাড়া, তেজপুর, মঙ্গলদৈ, লক্ষীমপুর, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি সহ বিভিন্ন স্থানে একই ধরনের কার্যসূচি গ্রহণ করা হয়।
গুয়াহাটিতে অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপত্ৰ “বিদ্যুৎ গ্ৰাহক বাৰ্তা”র প্ৰথম সংখ্যার উন্মোচন করেন অধ্যাপক আব্দুস সবুর। উন্মোচনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য শাখার অন্যতম আহ্বায়ক অজয় আচাৰ্য।