ইসরোয় বিজ্ঞানী পদে নিযুক্তি আমজাদ আমিনকে সংবর্ধনা ফাউন্ডেশনের
বরাক তরঙ্গ, ৫ জানুয়ারি : আক্ষরিক অর্থেই সংবর্ধনার জোয়ারে ভাসলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইসরো) বিজ্ঞানী পদে সদ্য নিযুক্তি পাওয়া আমজাদ আমিন রাহুল। শিলচরে তাঁকে উষ্ণ সংবর্ধনা জানায় হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন। সংস্থার সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক শিহাব উদ্দিন আহমেদের পৌরোহিত্যে শনিবার রাহুলকে ফুলের তোড়া, মানপত্র সহ শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা। পরে সংস্থার (হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন) কার্যালয় গোপালগঞ্জ বড় মসজিদ বাণিজ্যিক ভবনে অনুষ্ঠিত সেই সংবর্ধনা সভায় বরাক এডুকেশন সোসাইটি-সহ রাহুলকে পৃথকভাবে সংবর্ধনা জানান শিলচরের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও। এমনকি দুই খুদে পড়ুয়া হামিমাহ্ তাসনিম বড়ভূইয়া ও আনিহাহ্ তাসনিম বড়ভূইয়া সমেত তরুণ বিজ্ঞানীকে সংবর্ধনা জানায় যুব প্রজন্মের পড়ুয়া শাহরিয়ার খান। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বরাকের এই কৃতী সন্তানকে পশমি চাদর পরিয়ে সম্মান জানান সমাজকর্মী কল্যাণকুমার চক্রবর্তী। সম্মাননা প্রদান করেন আইনজীবী বাহার উদ্দিন। সবাই তাঁর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন। দেশ ও সমাজের উন্নয়নে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার মনোবাসনা ব্যক্ত করেন রাহুলও।
সোনাই নগদির গ্রাম তৃতীয় খণ্ড
কাছাড়ের এই প্রত্যন্ত গ্রামে রাহুলের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা। প্রাথমিক পড়াশোনা কাবুগঞ্জ ১৪১ নম্বর রামচরণ পাঠশালায়। সেখান থেকে ক্রমান্বয়ে শিলচর এনআইটি, খড়গপুর আইআইটি’র গণ্ডি পেরিয়ে বর্তমানে তিনি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো’র বিজ্ঞানী।
এ যেন রূপালি পর্দায় দেখা কোনও নায়কের নাটকীয় উত্থানের চালচিত্র। যা বাস্তব জীবনে অসম্ভব। তবে যতই অসম্ভব লাগুক না কেন, বাস্তবের মাটিতে সেই দুরূহতম কাজটাই করে দেখিয়েছেন রাহুল। বর্তমান প্রজন্মের সামনে নিজেকে মেলে ধরেছেন উদাহরণ হিসেবে।
কিন্তু তাঁর এই যাত্রাপথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না মোটেই। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে একথা বলেনও রাহুল। জানান, পদে পদে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন, অনেকবার ব্যর্থ-ও হয়েছেন। তবে দমে যাননি। ব্যর্থতা থেকে প্রতিবারই শিক্ষা নিয়ে সংশোধন করেছেন নিজেকে।
এদিন বক্তব্যে রাহুলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করার পাশাপাশি তাঁকে উপত্যকার উঠতি প্রজন্মের আদর্শ হিসেবে অভিহিত করেন হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের সভাপতি শিহাব উদ্দিন আহমেদ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা প্রাক্তন অধ্যক্ষ আবিদরাজা মজুমদার, বরাক এডুকেশন সোসাইটির কর্মকর্তা তথা আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড° আবুল হোসেন চৌধুরী, সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক লালমিয়া লস্কর, শিক্ষাবিদ সুব্রত নাথ, রাহুলের পিতা মকবির আলি লস্কর প্রমুখ। বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ মানবাধিকার কর্মী আইনজীবী ইমাদ উদ্দিন বুলবুল, হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন সম্পাদক আপ্তাব উদ্দিন লস্কর, কামাল মজুদার, লেখিকা আদিমা মজুমদার, সামিনুহল হক বড়ভূইয়া প্রমুখ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ মিলন উদ্দিন লস্কর। এদিন হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের নতুন সদস্যদের উত্তরীয় দিয়ে বরণ করা হয়।