উইমেন এমপাওয়ারমেন্টের জ্যান্ত উদাহরণ মহয়সী রানি অহল্যাবাঈ হোলকার : ব্রহ্মাজি রাও
বরাক তরঙ্গ, ১২ নভেম্বর : নারী সবলীকরণ আজকাল এই বিষয়টি সমাজে এক চর্চার বিষয়। পাশ্চাত্যের ভাষায় যাকে বলা হয় উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট। কিন্তু আমাদের এই দেশে তিনশো বছর আগে এই উইমেন এমপাওয়ারমেন্টের জ্যান্ত উদাহরণ ছিলেন মহয়সী রাণী অহল্যাবাঈ হোলকার। তিনি সেই বিষয়কে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা দিয়েছিলেন। বিদ্যাভারতী তার শিক্ষণ পরিকাঠামোতে ভারতের যশস্বী চার নারীকে নিরন্তর চর্চায় রেখেছে। এর মধ্যে রানি অহল্যাবাঈ অন্যতম। মঙ্গলবার বঙ্গভবনে মহীয়সী রানি অহল্যাবাঈয়ের ৩০০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ও বিদ্যাভারতী শিলচর সঙ্কুলের ব্যবস্থাপনায় মাতৃ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ঠিক এই মন্তব্য করেন অখিল ভারতীয় শিক্ষা সংস্থানের মন্ত্রী ব্রহ্মাজি রাও।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পরম্পরাগত বন্দনা পরিবেশন, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন সহ ভারতমাতা, ওঙ্কার, দেবী সরস্বতী ও রাণী অহল্যাবাঈয়ের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পন করেন বিশিষ্টজনেরা। এতে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা বিকাশ দক্ষিণ আসাম প্রান্তের সংগঠন মন্ত্রী মহেশ ভগবতজি, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সুপর্ণা রায়, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক তথা শিক্ষাবিকাশ পরিষদের দক্ষিণ আসাম প্রান্তের উপদেষ্টা (মার্গ-দর্শক) ড. নিখিল ভূষণ দে, করিমগঞ্জ কলেজের অধ্যাপিকা তথা শিক্ষাবিকাশ পরিষদের দক্ষিণ আসাম প্রান্তের সহ-সভাপতি ডঃ মালবিকা ভট্টাচার্য, শিক্ষা বিকাশ দক্ষিণ আসাম প্রান্তের সচিব অয়ন চক্রবর্তী, মাতৃ সম্মেলন সমিতির সভানেত্রী লাকি চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদিকা পাপিয়া চক্রবর্তী ও সঙ্গীতা বৈষ্ণব প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের সঙ্গে নিষ্ঠা সহকারে কাজ করে যাওয়া বিশিষ্ট মহিলাদের এদিন সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। প্রসঙ্গত, শিলচর সঙ্কুলের চারটি বিদ্যালয়ের এক হাজার মায়েদের সহযোগীতায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মোট দুটি পর্বে গোটা অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছিল। অনুষ্ঠানে প্রবক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে নিজের অভিমত তুলে ধরেন বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট লেখিকা ড. শমিতা ভট্টাচার্য। এদিনের অনুষ্ঠানের সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের নজির রাখা মহিলাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন শিলচর গুরুচরণ কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ড. গোপা সিনহা, শিলচর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যাপিকা ড. অপর্ণা ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী সুতপা বক্সী, বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট ধামাইল নৃত্য শিল্পী বীণাপাণি নাথ, বিশিষ্ট লেখিকা তথা শিলচর সাউথ পয়েন্ট স্কুলের প্রাক্তন অধ্যক্ষা জয়া দেব প্রমুখ। দ্বিতীয় পর্বে চারটি বিদ্যালয়ের মায়েদের দ্বারা অনুষ্ঠিত হয় ধামাইল নৃত্য। এর আগে সরস্বতী বিদ্যানিকেতন দক্ষিণ শিলচরের বিদ্যার্থীদের দ্বারা পরিবেশন করা হয় গণেশ বন্দনা ও রানি অহল্যাবাঈয়ের জীবনশৈলী নিয়ে আচার্যা জয়ন্তী চৌধুরীর নেতৃত্বে এক নৃত্যানাট্য পরিবেশন করা হয়। পরে আচার্যাদের দ্বারাও অনুষ্ঠিত হয় ধামাইল নৃত্য। এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে চারটি সঙ্কুলের আচার্যারা অংশগ্রহণ করে।
গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সরস্বতী বিদ্যানিকেতন দক্ষিণ শিলচরের আচার্যা ফাল্গুনী পাল ও মালুগ্রাম সরস্বতী বিদ্যানিকেতনের আচার্যা অঙ্কিতা দেব রায়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চারটি সঙ্কুলের আচার্য-আচার্যা সহ অভিভাবক ও বিদ্যার্থীরা। এদিন কল্যাণ মন্ত্রের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।