ধলাইয়ের অপহৃত যুবককে মিজোরামের জঙ্গল থেকে উদ্ধার
রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ১ ফেব্রুয়ারি : মণিপুরের জিরিবাম জঙ্গল থেকে কাছাড়ের দুই অপহৃত চালককে উদ্ধারের পর এবার মিজোরামে অপহৃত ধলাইয়ের এক যুবক তথা অটো চালককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করল কাছাড় পুলিশ। অসম-মিজোরাম সীমান্ত থেকে অপহরণ হওয়া ধলাই খুলিছড়ার অটো চালককে উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার সকালে অপহৃত অটো চালক আশরাফুল হককে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গত ২৬ জানুয়ারি সীমান্ত থেকে আশরাফুল হককে অপহরণ করেছিল অপহরণকারী দল। অপহরণের পর আশরাফুলের বাড়িতে ভিডিও পাঠিয়ে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে অপহরণকারী দলে। এই ঘটনা কাছাড় পুলিশের নজরে আসতেই অভিযানে নেমে সীমান্ত এলাকা থেকে অক্ষত অবস্থায় আশরাফুল হককে উদ্ধার করে পুলিশ।
এবিষয়ে কাছাড়ের পুলিশ সুপার নুমুল মাহাতো জানান, মিজোরাম থেকে উদ্ধার করা হয় আশরাফুল হককে। মিজোরামের বন্দুকধারী দুষ্কৃতকারীরা অপহরণ করে আটক রেখেছিল আশরাফুল হককে। গোটা ঘটনার সঙ্গে মাদকদ্রব্যের যোগসূত্ৰ আছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
উল্লেখ্য, আশরাফুল হক লস্কর অপহরণের চারদিন পর তার বাবা ময়ূর রাজা লস্কর ধলাই থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছেন। এফআইআরে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, গত ২৬ জানুয়ারি একই গ্রামের বাসিন্দা ইয়াহিয়া লস্কর নামে এক যুবক মিজোরামের ছাইপাই যাওয়ার কথা বলে তার ছেলেট অটো গাড়িটি রিজার্ভ করে নিয়ে যায়। সেদিন গভীর রাত পর্যন্ত ছেলে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা আশরাফুলের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পান।
পরদিন মিজোরামের একজন নাগরিক আশরাফুলের মোবাইল থেকে তার বাবার নম্বরে ফোন করে জানান, আশরাফুলকে মাদকদ্রব্যসহ ধরা হয়েছে এবং তাকে ছাড়াতে হলে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে আসতে হবে। আশরাফুলের বাবা তার ছেলের সাঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করলে, তাকে আশরাফুলের সঙ্গে কথা হয়। আশরাফুল তখন তার বাবাকে জানান, ২৬ জানুয়ারি ইয়াহিয়া ও আরও দুইজন তার অটো গাড়িতে করে মাদকদ্রব্য নিয়ে মিজোরামের ছাইপাই যাওয়ার পথে করকট নামক স্থানে তাদের গাড়িটি বিকল হয়ে পড়ে।
এরপর ইয়াহিয়া ও অন্যরা তাকে অন্য গাড়িতে করে মিজোরামের ছাইপাই পর্যন্ত নিয়ে যায় এবং সেখানে রেখে আসে।
আশরাফুলের বাবা ইয়াহিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানান যে, তারা আশরাফুলকে ছাড়িয়ে আনবেন, পুলিশের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু ৩০ জানুয়ারি, আশরাফুলের মোবাইল থেকে আবারও তার বাবার ফোন আসে। অপহরণকারীরা জানতে চায়, ১০ লক্ষ টাকার ব্যবস্থা হয়েছে কিনা, অন্যথায় তারা আশরাফুলকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। আবারও আশরাফুলের সাথে কথা বলানোর অনুরোধ করলে, অপহরণকারীরা তাকে তার বাবার সাথে কথা বলতে দেয়। আশরাফুল তখন জানান, তাকে মণিপুরের কোনও এক জায়গায় নিয়ে রাখা হয়েছে এবং তাকে দ্রুত ছাড়িয়ে আনার জন্য বলেন। এরপর অসহায় ময়ূর রাজা পুলিশের দ্বারস্থ হন এবং ইয়াহিয়া ও আরও দুজনের বিরুদ্ধে ধলাই থানায় এফআইআর দায়ের করেন। পুলিশ মামলা গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করেছে। শুক্রবার একটি ভিডিও আসে ময়ুর রাজার কাছে। এর কয়েক ঘণ্টার পর পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।